আন্ত্রিক ছড়াচ্ছে হাওড়ায়, কারণ নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই মহল
হাওড়ায় আন্ত্রিকের প্রকোপ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। প্রথমে শুধু হাওড়া পুরসভার ৩ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ড আক্রান্ত হলেও, এ বার সংক্রমণ ছড়িয়েছে হাওড়ার ১০-১২টি ওয়ার্ড-সহ বালি ও বেলুড়ের বিভিন্ন অঞ্চলেও। হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পাঁচ দিনে ২৫০ জনেরও বেশি আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে কয়েক মাসের শিশু থেকে বৃদ্ধ ও মহিলারাও আছেন।
আন্ত্রিকের প্রাথমিক কারণ হিসাবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জলের পাইপে নর্দমার জল মিশে যাওয়ার অভিযোগ করলেও হাওড়া পুরসভার দাবি, জলের সংক্রমণ থেকে এই রোগ হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়নি। যে সব জায়গায় প্রতি বর্ষার পরে এই রোগের প্রকোপ দেখা যায়, এ বারও সেই সব অঞ্চলেই বিক্ষিপ্ত ভাবে আন্ত্রিক ছড়িয়েছে।
হাওড়া পুরসভার মেয়র মমতা জায়সবাল সোমবার বলেন, “পুরসভার পানীয় জল থেকে আন্ত্রিক ছড়িয়েছে বলে দাবি করা হলেও আমি তা মানতে রাজি নই। তবু ওই সব এলাকায় পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের অফিসার-সহ কাউন্সিলরদের পাঠিয়েছি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁরা বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওষুধ দেওয়া হয়েছে।”
মেয়র এ কথা বললেও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায়ের বক্তব্য, যে উপসর্গ নিয়ে রোজ বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদের পরীক্ষা করে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে পানীয় জলে দূষণের কারণেই আন্ত্রিক ছড়িয়েছে। এ জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালগুলিতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা করেছে। দেবাশিসবাবু বলেন, “জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে আমরা নিশ্চিত জলে দূষণ থেকেই রোগ ছড়িয়েছে। এখনও পর্যন্ত হাওড়া ও বালির ২৫০ জনের বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।”
নোংরা বানভাসি পথেই জল সংগ্রহ। —নিজস্ব চিত্র
গত দু’সপ্তাহে দফায় দফায় বৃষ্টির পরে উত্তর ও মধ্য হাওড়ার বহু এলাকা জলে ডুবে যায়। একই অবস্থা হয় বালি ও বেলুড়ে। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নিচু অঞ্চলগুলি। গত সপ্তাহের শেষ দিকে বৃষ্টি কমার পরে অন্যান্য এলাকাগুলি থেকে জল নামলেও উত্তর হাওড়ার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড থেকে এখনও জল নামেনি। যেমন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যানার্জিবাগান ও দাসপাড়ায় সোমবারও জল জমে ছিল। জমা জলের মধ্যেই রয়েছে পুরসভার জলের কল। স্থানীয় বাসিন্দা বাপি মান্না বলেন, “গত সাত দিন ধরে এই জল জমে রয়েছে। এত দিন পুরকর্মীদের দেখা মেলেনি। জমা জলের আশপাশে উঁচু জায়গায় পুরকর্মীরা ব্লিচিং ছড়িয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সকালের বৃষ্টিতেও তাও ধুয়ে যায়।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন দিন ধরে ৩, ১১, ১৫, ১৬, ৩১, ৩২ সহ মোট ১২টি ওয়ার্ড থেকে পেটের রোগ ও বমির উপসর্গ নিয়ে বহু রোগী সত্যবালা আইডি হাসপাতাল, টিএল জায়সবাল, হাওড়া জেলা হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন নার্সিংহোমে আসছেন। সোমবারও রোগী আসা কমেনি। এ দিন বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় ২০ জন আন্ত্রিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানায়, রোগ আর যাতে না ছড়ায় সে জন্য এলাকায় বিশেষজ্ঞদের পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত করা হয়েছে। এ দিন অসুস্থ রোগীদের দেখতে এবং চিকিৎসা ঠিক হচ্ছে কি না দেখতে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নিয়ে সত্যবালা আইডি হাসপাতালে যান রাজ্যের কৃষি ও বিপণনমন্ত্রী এবং মধ্য হাওড়ার বিধায়ক অরূপ রায়।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.