|
|
|
|
দল ভাঙাচ্ছে তৃণমূল, অভিযোগ অশোকের
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
নিজেদের কর্মী, সংগঠন তৈরি করতে না পেরে তৃণমূল কংগ্রেস বিভিন্ন দল ভাঙার খেলা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করলেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে অশোকবাবু বলেন, “তৃণমূল নিজেরা কর্মী তৈরি করতে পারছে না, তাই দল ভাঙার খেলায় নেমেছে। যেখানেই ওঁরা জিততে বা ক্ষমতায় আসতে পারছে না, সেখানেই অন্য দলের কর্মীদের নানা লোভ দেখিয়ে দলে টানছে।”
তিনি জানান, গোটা রাজ্যের পাশাপাশি শিলিগুড়িতেও একই কাজ শুরু করে তৃণমূল। পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত, যেখানেই ওরা হেরেছে, সেখানেই অন্য দল ভাঙছে তৃণমূল। বিধানসভার পর থেকে তাই দেখা যাচ্ছে। মালদহ, চোপড়া, কালচিনিতে আমরা তা দেখেছি। কোচবিহারে তো পুরবোর্ড দল ভেঙে তৃণমূল দখল করল। অশোকবাবু বলেন, “ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূল মূল্যবোধের কথা বলত। আর ক্ষমতায় আসার পর সৌজন্যের রাজনীতির কথা বলেন। কিন্তু অন্যের দলের কর্মীদের নিজের দলে প্রলোভন দেখিয়ে নেওয়া কোন সৌজন্যের রাজনীতি নয়।”
শিলিগুড়ি পুরসভার অচলাবস্থার জন্য তৃণমূলের দল ভাঙানোর চেষ্টার খেলাকেই তিনি দায়ী করেছেন। একই কথা বলেন, “ফুলবাড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন তৈরির জন্য সিপিআই প্রার্থীকে দলে টেনে নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির সমর্থনে বোর্ড তৈরি করে তৃণমূল। পরে জানতে পারলাম ওই সদস্য শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দুর্নীতিতে অভিযুক্ত। তাঁকে দুর্নীতি থেকে রক্ষার প্রলোভন দেখিয়ে তৃণমূলে নেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভার নান্টু পালকে দলে নিয়ে পুরসভায় অচলাবস্থা শুরু করে তৃণমূলই।
কারও নাম না করে অশোকবাবু জানান, তৃণমূলের বিধায়ক তথা একাংশ কাউন্সিলরের এসজেডিএ মামলায় নাম জড়িয়েছে। তার পরেও তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শহরের মানুষ সব দেখছেন। সম্প্রতি ডেঙ্গি নিয়ে পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশের বিরুদ্ধে। অশোকবাবু বলেন, “পুরসভায় মেয়রকে যেভাবে হেনস্থা করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলরেরা তা দুভার্গ্যজনক। উনি অন্য দলের প্রতিনিধি হলেও শহরের মেয়র। মুখ স্বচ্ছতা, সৌজন্যবোধের কথা বললেও বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এখনও কিছুই করেননি। ওই কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
সম্প্রতি শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় কংগ্রেস থেকে বেশ কিছু নেতা কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, কয়েকজন বাম নেতার সঙ্গে তৃণমূলের কথাবার্তা চলছে। গত রবিবার ফাঁসিদেওয়া এলাকায় শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতা আইনুল হক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রণবেশ মন্ডল-সহ আরও কয়েকজন সদস্য তৃণমূলে যোগদান করেন। এর এক সপ্তাহ আগেই কলকাতায় তৃণমূলে যোগদান করেন দার্জিলিং জেলা ইনটাকের সভাপতি অলোক চক্রবর্তী।
অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “আমরা কোন দল ভাঙার খেলা খেলছি না। সকলে নিজেদের ইচ্ছেতেই আমাদের দলে আসতে চেয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে যে উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে, তাতে সবাই সামিল হতেই চাইছেন। আর অশোকবাবুর কথার জবাব আমি দিতে চাই না। উনি একজন জনপ্রতিনিধিও নন। শুধু প্রচারের আলোয় আসার জন্য মাঝেমধ্যে নানা কথা বলেন।” |
|
|
|
|
|