সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে সকাল থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। মাঝেমধ্যে হাল্কা বা মাঝারি বৃষ্টি। মাসখানেক ধরে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় এটা যেন একটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সোমবারেও সেই নিয়মের কোনও ব্যতিক্রম হল না।
এবং এর পিছনেও আছে নতুন একটি ঘূর্ণাবর্ত। এ বার ঠিক সময়ে বর্ষা আসার পরে কিছু দিন বৃষ্টি হলেও পরে বর্ষণে রীতিমতো মন্দা দেখা দেয়। তাতে খরার ভ্রুকুটি ঘনিয়ে উঠেছিল রাজ্যের কোনও কোনও জেলায়। বৃষ্টি-ঘাটতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, আমন ধান রোয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি না, সংশয় তৈরি হয়ে যায়। তার পরেই সব আশঙ্কায় জল ঢালতে শুরু করে একের পর এক নিম্নচাপ ও ঘূর্ণাবর্ত। গত ছ’সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে বা কলকাতা-বাংলাদেশের স্থলভূমিতে পরপর ছ’টি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। অগস্টে এমনিতে যে-বৃষ্টি হওয়ার কথা, ওই ধারাবাহিক ঘূর্ণাবর্ত-নিম্নচাপের দাপটে তার দ্বিগুণ বৃষ্টি পেয়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ। সেই ধারা বজায় রেখে সেপ্টেম্বরেরও শুরুটা যে-ভাবে হল, তাতে অগস্টের রেশ আরও বেশ কিছু দিন থাকবে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা।
সোমবার যে-ঘূর্ণাবর্তটি তৈরি হয়েছে, তার সক্রিয়তার জেরে আজ, মঙ্গলবারেও কলকাতা-সহ দক্ষিণ এবং উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক পশলা ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। দক্ষিণের তুলনায় উত্তরবঙ্গে বেশি বৃষ্টি হবে। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, ঘূর্ণাবর্তটি নিম্নচাপে পরিণত হয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠতে পারে।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, এ বার অগস্টে তিনটি নিম্নচাপ এবং দু’টি ঘূর্ণাবর্তের দাপটে দক্ষিণবঙ্গে ওই মাসের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের প্রায় দ্বিগুণ বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে (কলকাতায় অগস্টে গড়ে ৩৫২ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার কথা। এ বার হয়েছে ৬৮৫ মিলিমিটার)। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, কলকাতার উপরে থাকা নতুন ঘূর্ণাবর্ত মৌসুমি অক্ষরেখাকে অতি সক্রিয় করেছে। হুহু করে জলীয় বাষ্প ঢুকছে। ফলে মঙ্গলবারেও বৃষ্টি চলবে দক্ষিণবঙ্গে। বেশি বৃষ্টি হবে পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা এবং উত্তরবঙ্গে।” ওই ঘূর্ণাবর্তটি নিম্নচাপে পরিণত হবে কি না, বলতে পারছেন না আবহবিদেরা। তাঁরা শুধু বলছেন, ঘূর্ণাবর্ত যদি নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়, বর্ষণ বাড়বে। |