যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের যুদ্ধের মাঝেই সিরিয়ায় মার্কিন হামলার তোড়জোড়ের ব্যাপারে আগাম প্রতিবাদ জানিয়ে রাখছেন সার্বিয়ার দুই টেনিস তারকা বিশ্বের এক নম্বর নোভাক জকোভিচ আর মেয়েদের প্রাক্তন এক নম্বর আনা ইভানোভিচ।
সার্বিয়ার কট্টর নেতা স্লোবোডান মিলোসোভিচের শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৯৯-এ বেলগ্রেডে ন্যাটোর বিমান হামলার প্রসঙ্গে জকোভিচ বলেন, “আমি যে কোনও অস্ত্র, বিমান হামলা বা মিসাইল আক্রমণের বিরুদ্ধে। যে কোনও ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপের বিরোধী। কারণ, আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি জানি এতে কারও কখনও ভাল হয় না। সার্বিয়ায় আমরা ওই ভয়ঙ্কর সময়টা যে ভাবে কাটিয়েছি তার পর চাই না সেই একই অভিজ্ঞতা অন্য কারও হোক। যুদ্ধ মানবতার সবচেয়ে খারাপ দিক। এতে কেউই জেতে না।” |
এখানেই না থেমে আট বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন বলেন, “সেই বিমান হামলা আমাদের আরও শক্তপোক্ত করে তুলেছিল। ওই আড়াই মাসকে আমরা উজ্জ্বল দিক হিসেবেই ধরি। তখনও আমরা বাচ্চা। ১২ বছর বয়স। ভেবেছিলাম যাক এখন আর স্কুলে যেতে হবে না। আরও বেশি করে টেনিস খেলতে পারব। ঠিক আমাদের মাথার উপর থেকে বিমান উড়ে যাওয়ার মধ্যেই ওই দু’মাস দিনের বেলাগুলো কাটিয়েছিলাম টেনিস কোর্টে। কিন্তু সপ্তাহ দুয়েক বোমা বর্ষণের পরই প্রায় প্রাণ হাতে নিয়ে পালাতে হয়েছিল। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলাম।” ‘জোকার’-এর মতোই প্রায় একই সুরে প্রতিবাদ জানান ইভানোভিচ। তাঁর মনে পড়ে যাচ্ছিল সেই ৭৮ দিন বোমা পড়ার মধ্যেই কী ভাবে বন্ধুদের সঙ্গে শুকিয়ে যাওয়া সুইমিং পুলে টেনিস খেলে কাটাতেন। আনা বলে দেন, “পুলটা খুব পুরনো ছিল। জল ধরে রাখা যাচ্ছিল না। তাই পুলটা খালি করে ভিতরে কার্পেট পেতে দুটো টেনিস কোর্ট করা হয়েছিল। কিন্তু ক্রস কোর্ট শট মারা যাচ্ছিল না। শুধু ডাউন দ্য লাইন শট।”
শুধু তাই নয়, আনার মনে আছে কী ভাবে সেই সময় দেশের বাইরে কোনও টুর্নামেন্টে খেলতে যেতেন। ন্যাটোর হামলায় বেলগ্রেডের সমস্ত উড়ান বাতিল করা হয়েছিল বলে আনাকে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিতে বাবা-মার সঙ্গে সাত ঘণ্টা গাড়িতে চেপে হাঙ্গারি যেতে হয়েছিল। সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা আর কারও হোক চান না আনা। |