সোমবারই ইউকি ভামব্রি তাইপে-তে ১৫০০০ ডলার আইটিএফ ফিউচার্স টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হলেন। ভারতের শেষ জুনিয়র গ্র্যান্ড স্ল্যাম সিঙ্গলস চ্যাম্পিয়ন (’০৯ অস্ট্রেলীয় ওপেন) আইএমজি-র স্পনসরশিপে টেনিসের পাঠ নিচ্ছেন ফ্লোরিডায়।
ভারতের এক নম্বর ডেভিসকাপার সোমদেব দেববর্মনের স্থায়ী বাস ভার্জিনিয়ায়। দেশের হয়ে বছরে মেরেকেটে দু-তিনবার খেলে যান পর্যটক হয়ে এসে। বিশ্ব র্যাঙ্কিং ১১৪।
একটা ব্যাপারে এঁদের সবার আগে কিন্তু সুমিত নাগল!
সিনিয়র-জুনিয়র মিলিয়ে বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ে এই মুহূর্তে একমাত্র ভারতীয় প্লেয়ার, যাঁর প্রথম একশো জনের মধ্যে থাকার কৃতিত্ব। আইটিএফের সর্বশেষ (২৬ অগস্ট, ২০১৩) র্যাঙ্কিংয়ে সুমিতের স্থান ৭১ নম্বরে। জয়দীপ মুখোপাধ্যায় থেকে আখতার আলিপ্রাক্তন তারকারা একমত, দেশের সেরা প্রতিভা সুমিত। ঠিক মতো বেড়ে উঠলে ভারতের টেনিস ভবিষ্যৎ। |
ভারতীয় টেনিসের বর্তমান ধারা মেনে দিল্লির আঠারো বছরের টিনএজারও বিদেশে খেলাটার উচ্চতর পাঠ নিচ্ছেন গত কয়েক বছর যাবত। যার পিছনে প্রধান অবদান মহেশ ভূপতির। চলতি যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে যাঁর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জীবন শেষ হল। বছর শেষে অবসর নেবেন বলে ঠিক করে রাখায়। কিন্তু ভারতীয় টেনিসকে সম্ভবত দিয়ে যাচ্ছেন সোমদেব, য়ুকি ভামব্রি-উত্তর সেরা প্লেয়ার। দেশজোড়া তাঁর টেনিস অ্যাকাডেমির দিল্লি শাখা থেকে বছর তিনেক আগে সুমিতকে ‘স্পেশ্যাল স্কলারশিপ স্পট’ করে মহেশ নিয়ে যান বেঙ্গালুরুতে নিজের অ্যাকাডেমির মূল কেন্দ্রে। সুমিতের স্পনসর বলতে মহেশের সংস্থাই। মূলত যাদের উদ্যোগে সুমিতের কানাডায় থেকে আরও আধুনিক ট্রেনিং নেওয়া চলছে।
কানাডায় সে দেশের এক সময়ের অত্যন্ত প্রতিভাবান টেনিস প্লেয়ার ববি মাহল-এর কাছে এখন কোচিং নিচ্ছেন সুমিত। বিশ্ব টেনিসে এই মুহূর্তে ‘কানাডিয়ান সেনসেশন’ মিলোস্লাভ রাওনিকের আগের প্রজন্মের প্লেয়ার ববি। তিন বারের জুনিয়র কানাডা চ্যাম্পিয়ন। চার বারের প্রভিশনাল জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন। আন্দ্রে আগাসির এক সময়কার নিয়মিত হিটিং পার্টনার ববি এখন আটত্রিশ। ঠিক যখন সিনিয়র লেভেলে তারকা হয়ে ওঠার চিহ্ন ফুটে উঠছে তাঁর টেনিসে, কাঁধের চোটে ২০০০ সালে দুর্ভাগ্যজনক অবসর নিতে বাধ্য হন। তার পর থেকে কানাডার ব্রামেলিয়া টেনিস ক্লাব এবং অন্টারিও র্যাকেট ক্লাবদু’জায়গাই কোচিং চলছে ববির।
গুরুর মতো শিষ্যের খেলার ধরন মনে করে টেনিসমহল। আক্রমণাত্মক। বেসলাইন নির্ভর। জোরালো গ্রাউন্ডস্ট্রোকের অধিকারী সুমিত। বিদেশের জুনিয়র সার্কিটে ব্যস্ত থাকায় দেশে খেলতে প্রায় দেখাই যায় না। কলকাতায় শেষ খেলেছেন ২০১২-এ। দক্ষিণ কলকাতা সংসদে আইটিএফ জুনিয়র টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। অদ্ভুত ভাবে এআইটিএ-র জুনিয়র র্যাঙ্কিংয়ে অনূর্ধ্ব ষোলো-তে দুই নম্বর (গর্বিত বাত্রা-র পরে) এবং অনূর্ধ্ব আঠারোয় তিন নম্বরে (ঋষভ আগরওয়াল ও শেখ আবদুল্লার পরে) সুমিত। সর্বভারতীয় টেনিস সংস্থার টুর্নামেন্ট বেশি খেলেন না, এই অজুহাতে। অথচ গত বছর জুনিয়র যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে কোয়ালিফাইং রাউন্ডে দুটো ম্যাচ জিতে চমকে দিয়ে মূলপর্বে ওঠা সুমিতের (মূলপর্বে প্রথম ম্যাচে হারেন) ২০১৩-এ এগারোটা আইটিএফ জুনিয়র টুর্নামেন্ট খেলে জয়-হারের হিসেব ১৬-১০। নেদারল্যান্ডস, দিল্লি ও ইকুয়েডরে সিঙ্গলসে সেমিফাইনালিস্ট। দিল্লিতে ডাবলসে চ্যাম্পিয়ন।
যে সুমিত নাগল সম্পর্কে আগাসি থেকে অ্যান্ডি রডিক, অ্যান্ডি মারে থেকে নিশিকোরির হাইপ্রোফাইল কোচ ব্র্যাড গিলবার্ট টুইট করেছেন, ‘প্রতিভাবান কিশোর। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ!’ |