নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে
৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ নিজস্ব সংবাদদাতা • চন্দননগর |
স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে নিজের বাড়িতে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে সাত বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিল চন্দননগর আদালত।
ঘটনাটি ২০০৮ সালের। শেওড়াফুলি যৌনপল্লিতে বছর সতেরোর মেয়েটিকে একা ঘুরতে দেখে পুলিশের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন শেওড়াফুলি দুর্বার সমন্বয় কমিটির সদস্যেরা। মেয়েটি অন্তঃসত্তা ছিল। সিঙ্গুরের বাসিন্দা বাপি ঘোষের নামে মেয়েটিকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন দুর্বারের তৎকালীন সম্পাদক শঙ্করী দাস।
সোমবার চন্দননগর আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক (ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট) মাসুক হোসেন খান বাপিকে সাত বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেন। পাশাপাশি, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন তিনি।
শঙ্করীদেবী জানান, ওই কিশোরী বাপির বাড়িতে ঠিকাকাজ করত। সেখানেই থাকত। মাঝবয়সী বাপিকে পিসেমশাই বলে ডাকত। একদিন স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে বাপি মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। গর্ভবতী হয়ে পড়ে সে।
ঘটনাটি বাপির স্ত্রীকে জানায় মেয়েটি। যদিও মেয়েটির দাবি, সে কথা মানতে চাননি বাপির স্ত্রী। পরে ডিসেম্বরের প্রবল ঠান্ডায় এক রাতে মেয়েটিকে যৌনপল্লি এলাকায় ছেড়ে আসে বাপি। মেয়েটি তখন সাত মাসের গর্ভবতী।
যে হেতু অভিযুক্তের বাড়ি সিঙ্গুরে, তাই সিঙ্গুর থানা শঙ্করীদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে। মেয়েটিকে লিলুয়া হোমে পাঠানো হয়।
সরকার পক্ষের আইনজীবী অন্নপূর্ণা চক্রবর্তী বলেন, “মেয়েটির উপরে যে অত্যাচার করা হয়েছিল, আদালতেই তা পরিস্কার হয়ে যায়। অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে যে একটি মেয়ে কী ভাবে রুখে দাঁড়াতে পারে এবং সমাজ বা বিচার ব্যবস্থাকে পাশে পায়, এই রায় সে কথাই প্রমাণ করল।” দুর্বারের ভূমিকারও প্রশংসা করেন সরকারি আইনজীবী। শঙ্করীদেবী বলেন, “মেয়েটি যে বিচার পেল, তা জেনে খুব ভাল লাগছে। এই ঘটনা আমাদের কাছে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।”
হোমে পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিল মেয়েটি। বিচারক উদ্যোগী হয়ে হরিপালে মা-বাবার কাছে মেয়েটিকে সন্তানকে নিয়ে ফেরানোর বন্দোবস্ত করেন। শিশুপুত্রকে নিয়ে মেয়েটি এখন সেখানেই রয়েছে। সোমবারেও বিচারক মেয়েটিকে মহকুমাশাসকের কাছে পাঠান, যাতে নিজের এবং ছেলের ভরণপোষণের জন্য প্রশাসন তাকে সাহায্য করতে পারে। অন্নপূর্ণাদেবী জানান, প্রশাসনিক ভাবে মেয়েটিকে সাহায্য করা হবে বলে মহকুমাশাসক আশ্বস্ত করেছেন।
|