|
|
|
|
যৌন পরীক্ষায় পাশ করে জেলে আশারাম
নিজস্ব সংবাদদাতা • জোধপুর |
নাবালিকাকে যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত আশারাম বাপুর ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল জোধপুরের এক আদালত। আজ আদালতে জোধপুর পুলিশের তরফে জানানো হয়, এই মুহূর্তে আশারামকে আর জেরার প্রয়োজন নেই। সে কারণে আর নিজেদের হেফাজতে চায়নি তারা। এর পরেই আশারামকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট মনোজ কুমার।
কয়েক দিন ধরে নাটকের পরে শনিবার ইনদওরের এক আশ্রম থেকে আশারাম বাপুকে গ্রেফতার করেছিল জোধপুর পুলিশ। কিন্তু তার পর থেকেই প্রশ্ন উঠতে থাকে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আদৌ সত্যি কি না। কারণ আশারামের ছেলে প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিলেন, তাঁর বাবা গুরুতর অসুস্থ। জেরায় ৭২ বছরের আশারামও দাবি করেন, তাঁর নার্ভের অসুখ রয়েছে। তাঁর পক্ষে কারও যৌন নির্যাতন সম্ভব নয়। কিন্তু যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে আজ আদালতে জোধপুর পুলিশ দাবি করে, যৌন সম্পর্ক স্থাপনে সক্ষম আশারাম। |
|
জোধপুরের আদালতে নিয়ে আসা হচ্ছে আশারামকে। ছবি: পিটিআই। |
জোধপুর পুলিশ কমিশনার বিজু জর্জ আজ সাংবাদিকদের জানান, গত কাল আদালত আশারামকে এক দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই আশারামকে মান্দোরে রাজস্থান আর্মড কনস্টেব্যুলারি ব্যাটেলিয়নের ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। জর্জের দাবি, আশারাম মানসিক ও শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
শুধু তা-ই নয়, তিনি যে এখনও
যৌন সম্পর্ক স্থাপনে সক্ষম চিকিৎসকেরা এমন সার্টিফিকেট দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন জর্জ। তিনি জানিয়েছেন, আশারামকে যা খেতে দেওয়া হচ্ছে সবই তিনি খাচ্ছেন। তাঁর আচার-আচরণেও অসুস্থতার কোনও লক্ষণ নেই।
আশারামের অসুস্থতা নিয়ে তাঁর ছেলে যে দাবি করেছিলেন সেই প্রসঙ্গে জোধপুর ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অজয় পাল লাম্বা বলেন, “আশারাম মিথ্যে কথা বলছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আমাদের যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। ওঁর ছেলে অনেক কিছুই বলতে পারে। এ নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই।” এখনও পর্যন্ত তাঁর দাবির পক্ষে আশারাম কোনও তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেননি বলেও জানিয়েছেন লাম্বা।
গত শনিবার গভীর রাতে ইনদওরের আশ্রম থেকে আশারামকে গ্রেফতার করে জোধপুর পুলিশ। এর পর তাঁকে প্রথমে দিল্লি, পরে সেখান থেকে জোধপুরে নিয়ে আসা হয়। রবিবার দুপুরে তাঁকে আদালতে তোলা হলে এক দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরেই পুলিশ আশারামকে নিয়ে জোধপুর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে মানাই আশ্রমে নিয়ে যায়। এই মানাই আশ্রমেই ১৬ বছরের এক নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে আশারামের বিরুদ্ধে। ওই আশ্রমে কী ঘটেছিল, রবিবার সে সম্পর্কে আশারামকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। যদিও আশারাম দাবি করেছেন, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। ঘটনার দিন তাঁর বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল। সে দিন ওই নাবালিকার সঙ্গে এক ঘণ্টা একটা বদ্ধ ঘরে ছিলেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা-ও উড়িয়ে দিয়েছেন আশারাম। তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, আগামী কাল আদালতে আশারামের জামিনের আবেদন
করা হবে।
এ দিন কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় জোধপুর আদালতে তোলা হয় আশারামকে। আদালত চত্বরে আশারামের সমর্থক এবং উৎসাহী জনতার ভিড় ছিল দেখার মতো। আশারামের পরনে ছিল সাদা ধুতি-চাদর, মাথায় লাল টুপি। ১৪ দিনের জেল হেফাজতের রায় শোনার পরেই এক দল জনতা আশারামের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। আদালত থেকে আশারামকে সোজা জোধপুর সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আশারাম সেখানেই থাকবেন।
এ দিন আশারামের জেল হেফাজত প্রসঙ্গে কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়, এ দেশের যে কোনও নাগরিক, সে যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, কোনও অপরাধ করলে তাঁকে শাস্তি পেতেই হবে। প্রসঙ্গত গত কালই আশারামকে বিজেপি সমর্থন করছে বলে কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। |
পুরনো খবর: আশারামের জেরা শুরু, কালো পতাকা জোধপুরে |
|
|
|
|
|