|
|
|
|
পুলিশ ফাঁড়ির কাছেই বেঁধে রেখে ডাকাতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
পরিবারের সদস্যদের বেঁধে রেখে প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে লুঠপাট চালাল আট-দশ জনের একটি ডাকাত-দল। চড় মারা হয় ওই পরিবারের এক বৃদ্ধাকেও। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের অম্বুজা এলাকায়। সিটি সেন্টার ফাঁড়ি থেকে এই এলাকার দূরত্ব মেরে কেটে পাঁচশো মিটার। পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) এস সিলভা মুরুগান বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। বেশ কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে। দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অম্বুজা এলাকার ১৬ নম্বর রাস্তার ধারে বাড়ি ব্যবসায়ী অমিত শর্মার। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। কলকাতায় কাজে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিলেন তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে, পরিচারিকা ও তাঁর ছেলে। পুলিশের কাছে অমিতবাবুর পরিবারের সদস্যেরা অভিযোগ করেছেন, রাত আড়াইটে নাগাদ দুষ্কৃতীরা নীচের তলার জানালার লোহার গ্রিল খুলে বাড়ির ভিতরে ঢোকে। সেই সময় এক তলার ঘরে ছেলেকে নিয়ে শুয়েছিলেন পরিচারিকা পূর্ণিমা সিংহ। দুষ্কৃতীরা ধারাল অস্ত্র দেখিয়ে তাঁদের বিছানার চাদর দিয়ে বেঁধে ফেলে উপরে উঠে যায়। সেখানে অমিতবাবুর বাবা ভগবতী প্রসাদ ও মা মীনাদেবী শুয়েছিলেন। |
|
লণ্ডভণ্ড ঘর। —নিজস্ব চিত্র। |
মীনাদেবী বলেন, “গলায় ধারাল অস্ত্র ঠেকিয়ে আমাকে আলমারির চাবি দিতে বলে ওরা। আমি হতভম্ব হয়ে চেয়ে থাকায় আমাকে ওরা চড় মারে।” ওই দুষ্কৃতী দল এর পর আলমারি খুলে নগদ টাকা ও গয়না বের করে নেয়। মীনাদেবীর অভিযোগ, তিনি ফোন করতে গেলে তাঁর এক জন তাঁর গালে চড় মারে। তাঁর ঠোঁট কেটে যায়। এর পর দুষ্কৃতীরা তাঁকে পাশের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে অমিতবাবুর স্ত্রী জ্যোতি তাঁর আট বছরের ছেলেকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন। দরজা খুলতেই দুষ্কৃতীরা জ্যোতিদেবীর শরীরে থাকা সব গয়না জোর করে খুলে নেয় বলে অভিযোগ।
মীনাদেবীর অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের ওই দলটি লুঠপাট চালানোর মাঝে ফ্রিজে রাখা ঠাণ্ডা পানীয় খায়। ঘরে রাখা সিগারেট খায়। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের সবাইকে কার্যত ঘরে আটকে রেখে প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে ‘কাজ’ সারল। এর পর হুমকি দিয়ে বেরিয়ে গেল ওরা। সম্ভবত নীচে রাখা গাড়িতে চড়ে উধাও হয়ে গেল দলটি।” তিনি জানান, এরপরেই তাঁর পূত্রবধূ ফোন করেন ছেলেকে। ছেলে ফাঁড়িতে খবর দিলে ভোর ৬টা নাগাদ পুলিশ আসে।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, আট-দশ জনের ওই দুষ্কৃতী দলটি বাংলা ভাষী। তবে তারা মাঝে মাঝে হিন্দিতেও কথা বলছিল। যদিও কথায় বাংলা টান স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। ডাকাত দলের সদস্যেদের বয়স ২০-২২ বছরের মধ্যে। |
|
|
|
|
|