জেল থেকে চম্পট দিল রক্ষীদের ‘বিশ্বাসী’ বন্দি
জেল সুপার থেকে কর্মী, সবাই তাকে বিশ্বাস করতেন। সেই বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে জেল থেকে চম্পট দিল যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক কয়েদি। শনিবার রাতে বাঁকুড়া জেলা সংশোধনাগারের ওই ঘটনায় চার কারারক্ষীকে শো-কজ করা হয়েছে।
কারা দফতর সূত্রের খবর, কাল রাতে রহস্যজনক ভাবে জেলা সংশোধনাগার থেকে উধাও হয়ে যায় মনোরঞ্জন সাউ নামের ওই বন্দি। পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক ওই বন্দি পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় থানার বাসিন্দা। নিজের পিসি শ্বাশুড়িকে খুনের অভিযোগে যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছিল মনোরঞ্জন। ২০০৭ সাল থেকে বাঁকুড়া জেলা সংশোধনাগারেই রয়েছে সে। জেলের মধ্যে অন্য বন্দিদের খেতে দেওয়ার দায়িত্বের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলের জোগান দেখাশোনাও করত মনোরঞ্জন। অন্য বন্দিরা খাবার নিয়ে নিজেদের সেলে ঢুকে যাওয়ার পরে রাত আটটা নাগাদ মনোরঞ্জন নিজে সেলে যেত। কারা দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, শনিবারও সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ জেলরক্ষীদের মনোরঞ্জন বলে, সে জলের পাম্প চালাতে যাচ্ছে। তার পর থেকেই সে বেপাত্তা। জেলের এক কর্মীর কথায়, “তখনও পর্যন্ত জেলের কেউ ভাবতেই পারেনি, মনোরঞ্জন পালিয়ে গিয়েছে। রাত সাড়ে আটটার পরেও তার খোঁজ না মেলায় জেলের ভিতরে শোরগোল পড়ে যায়।” তন্নতন্ন করে খুঁজেও হদিস মেলেনি মনোরঞ্জনের।
খবর পেয়ে রবিবার সকালে পুলিশ এসে সংশোধনাগার চত্বরে তল্লাশি চালিয়েছে। সে সময়ে সংশোধনাগারের তামলিবাঁধ রোডের দিকে কিছু দাগ চোখে পড়েছে পুলিশের। যা দেখে পুলিশের অনুমান, মনোরঞ্জন রড বা বাঁশের সাহায্যে দেওয়াল টপকে জেল থেকে চম্পট দিয়েছে। এই ঘটনায় জেলকর্মীদের যুক্ত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। রবিবার দুপুুরে পুরো ঘটনার তদন্ত করতে আসেন কারা দফতরের এআইজি কল্যাণকুমার প্রামাণিক এবং ডিআইজি শোভনকুমার দীন। প্রাথমিক তদন্তের পরে শোভনবাবু বলেন, “কী ভাবে কয়েদি জেল থেকে পালাল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আমরা অন্তর্ঘাতের বিষয়টিও খতিয়ে দেখছি। এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।”
তবে, জেল বা পুলিশের অফিসারেরা কিছু না বলতে চাইলেও কারা দফতর সূত্রের খবর, মনোরঞ্জনের পালানোর পিছনে প্রাথমিক ভাবে কারারক্ষীদের যোগসাজশের বিষয়টিই সন্দেহ করা হচ্ছে। সে কারণে ইতিমধ্যেই সে সময়ে কর্তব্যরত চার জন কারারক্ষীকে শো-কজ করা হয়েছে। জেল সূত্রের খবর, মনোরঞ্জনের সঙ্গে কারারক্ষী এবং জেল আধিকারিকদের সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। সে জন্য সে অন্য কয়েদিদের থেকে অনেক বেশি ‘স্বাধীনতা’ পেত। কারা দফতরের এক কর্তার কথায়, “জেলকর্মীদের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়েই মনোরঞ্জন চম্পট দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। পাঁচিলে কিছু দাগ মিললেও তা কয়েদি পালানোর বলে মনে হচ্ছে না। কী ভাবে ও পালাল, তা নিয়ে রহস্য রয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে। তবে জেলকর্মীদের গাফিলতি রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.