|
|
|
|
সরকারি গাড়ি ব্যবহারে বিধিনিষেধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পঞ্চায়েত সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি, সহ-সভাপতিদের সরকারি গাড়ি ব্যবহার করা নিয়ে ফরমান জারি করল তৃণমূল। নির্দেশে জানানো হয়েছে, সরকারি গাড়ির অপব্যবহার করা যাবে না। কেউ সরকারি গাড়িতে বাড়ি থেকে সমিতিতে যাতায়াত করবেন না, বাইক ব্যবহার করবেন।
কেন এমন ফরমান? তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলছেন, “সরকারি গাড়ি ব্যবহার করা নিয়ে আমরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতিদের কিছু নির্দেশ দিয়েছি। জানিয়েছি, তাঁরা কী করবেন, কী করবেন না। সবে পঞ্চায়েত সমিতি গঠন হয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে, নবনির্বাচিত সভাপতি, সহ-সভাপতিদের এ নিয়ে কিছু নির্দেশ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।” সাধারণত, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন। সমিতির কাজে কোথাও গেলে গাড়ি করেই যান। প্রয়োজনে সহ-সভাপতিরাও সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন। তবে অনেক ক্ষেত্রে গাড়ি অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। কেউ সরকারি গাড়িতে দলের কর্মসূচিতে যান, কেউ বা ব্যক্তিগত কাজে গাড়ি ব্যবহার করেন। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের আশঙ্কা, ক্ষমতার স্বাদ পেতে শুরু করলে আগামী দিনে সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতিদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠবে। তখন দলকেই বিড়ম্বনায় পড়তে হবে। তাই আগে থেকেই সকলকে সতর্ক করা হয়েছে।
একদা লালদুর্গ বলে পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে সিপিএম। ৬৭টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে ৬৪টি তৃণমূলের দখলে এসেছে। ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ২৮টি শাসকদলের দখলে। জেলার সর্বত্র যে ভাবে সমর্থন বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছেন তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদের আশঙ্কা, এলাকা বিরোধী-শূন্য থাকায় নির্বাচিত সদস্যদের কেউ কেউ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়তে পারেন। পরবর্তীকালে যা দলের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাবে। নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের কাজ দেখভালে ইতিমধ্যে একটি ‘মনিটরিং কমিটি’ গড়া হয়েছে। কমিটি তৈরি করেছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কমিটি জেলা পরিষদের কাজকর্মের উপর নজরদারি চালাবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর বৈঠকে বসবে। নির্বাচিত সদস্যরা কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়লে, কমিটির সদস্যদের জানাবেন। কমিটির সদস্যরা তাঁদের পরামর্শ দেবেন। জেলা তৃণমূলের একাংশ নেতৃত্বের মতে, ‘মনিটরিং কমিটি’র ফলে নির্বাচিত সদস্যরা আর ইচ্ছেমতো কাজকর্ম করতে পারবেন না। তাঁদের উপর নজর রাখাও সম্ভব হবে। আর এ বার সরকারি গাড়ি করা নিয়েও ফরমান জারি করা হল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলছেন, “আমরা জেলা থেকে নজর রাখছি। কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এলে ছেড়ে কথা বলা হবে না। নির্বাচিত সব সদস্যকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে। তবেই মানুষ সব সময় পাশে থাকবেন।”
দলের জেলা সভাপতির এই বার্তা তৃণমূলের নীচুতলায় পৌঁছয় কি না, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|