নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য কংগ্রেস, বিজেপি-র পাশাপাশি তৃণমূলকেও দায়ী করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, জ্বালানি তেলের বিনিয়ন্ত্রণ এবং কৃষিতে ভর্তুকি তুলে দেওয়াই আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। শনিবার গণ-আন্দোলনের শহিদ দিবসের সভায় বুদ্ধবাবু অভিযোগ করেন, “কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়ে তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু তাঁর দল প্রতিবাদ করেনি। এখন তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে নেই বললে কী হবে?” ওই সভায় বুদ্ধবাবু ছাড়াও ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিআইয়ের ধীরেন দাশগুপ্ত, আরএসপি-র
ক্ষিতি গোস্বামী, ফব-র জয়ন্ত রায় বক্তৃতা করেন। |
প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে বুদ্ধদেব।—নিজস্ব চিত্র |
বুদ্ধবাবুর অভিযোগ, বাজারে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার টাস্ক ফোর্স তৈরি করলেও তার কোনও ভূমিকা নেই। তাঁর বক্তব্য, “পাইকারি ও খুচরো বাজারের মধ্যে তোলাবাজরা জিনিসের দাম বাড়াচ্ছে। এরা তৃণমূলের বড় শক্তি।” অন্যায্য ভাবে দাম বাড়ানোর জন্য কেন এক জনকেও পুলিশ গ্রেফতার করেনি, সে প্রশ্নও তোলেন বুদ্ধবাবু। তিনি বলেন, “গ্রেফতার না হলে ব্যবসায়ীরা ভয় পাবে কেন?” তৃণমূলের লোকেরা ফুচকা বিক্রেতাদের কাছ থেকেও তোলা নিচ্ছে এই অভিযোগ তুলে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রও টাস্ক ফোর্সের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “শুধু তিনটি জিনিসের দাম কমেছে। মানুষের নিরাপত্তা, নারীর সম্মান আর সরকারের কথার দাম।”
বাজারে জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণের দাবিতে বামেরা বিভিন্ন বাজারের সামনে সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুদ্ধবাবু বলেন, “বামপন্থীদের প্রতিবাদও চলবে, জিনিসের দামও বাড়বে এটা হতে পারে না। এমন প্রতিবাদী আন্দোলন করতে হবে, যাতে জিনিসের দাম কমে।” সরাসরি ‘জঙ্গি আন্দোলনের’ কথা না বললেও বুদ্ধবাবুর বক্তব্য, “আমরা বাজারের সামনে প্রতিবাদ করছি। মিছিল করছি। কিন্তু মানুষ প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ চাইছে। তারা চাইছে কিছু হোক।” লোকসভা ভোটের বেশি দেরি নেই। তাই পুজোর আগে মূল্যবৃদ্ধি বিরোধী আন্দোলনকে হাতিয়ার করে মানুষকে কাছে টানার যে দাওয়াই বুদ্ধবাবু দিলেন, বাম কর্মীরা তা কার্যকর করতে পারেন কিনা, সেটাই দেখার। |