পুজোর কেনাকাটা সারতে গিয়ে শপিং মলগুলোকে একেবারে এড়িয়ে থাকা যায় কি? বড়রা যতই গোমড়া-মুখে শপিং মল-এর বেশি দাম নিয়ে কড়া কথা শোনাক, তোমরা তো জানো, মল-এর চার্মটা শুধুই কেনাকাটার নয়! একই দিনে বিভিন্ন ব্র্যান্ড নিয়ে নাড়াচাড়া; জামা, জুতো, অ্যাকসেসরির লিস্ট মিলিয়ে ব্যাগে পোরা, ক্লান্ত হলে এসি-র হাওয়া খাওয়া, খিদে পেলে বার্গার থেকে বিরিয়ানি সব হাতের নাগালে পাওয়া, আর এনার্জি বাঁচলে টুকুস করে একটা সিনেমাও দেখে ফেলা এত সব মল ছাড়া অন্য কোথাও পাওয়া যায় না কি? সোজা কথা, মল মানে পুরোদস্তুর একটা আউটিং।
কিন্তু ধরো, এর সঙ্গে আরও কিছু উপরি পাওনা যদি জুটে যেত! এই যেমন, দুটো জামা কেনার মাঝখানে তুমি একটু স্কিয়িং করে নিলে! এটা সত্যি, আমাদের চার পাশে এখনও এমন অভিনব জিনিস বিশেষ পাওয়া যায় না। কিন্তু বিশ্বের নানা কোণে যে সব বিশাল বিশাল শপিং কমপ্লেক্সগুলো ছড়িয়ে আছে, সেগুলো দেখতে যেমন আজব, তেমনই আজব এদের এন্টারটেনমেন্ট-এর পসরাগুলো।
স্কিয়িং-এর কথা বলছিলাম। দুবাইয়ের ‘মল অব দ্য এমিরেট্স’-এ রয়েছে আস্ত একখানা স্কি রিসর্ট স্কি দুবাই। পশ্চিম এশিয়ার প্রথম ইনডোর স্কি রিসর্ট এবং স্নো পার্কের ঠিকানা এই মল’টি। ভাবো, মরুভূমির দেশ, অথচ সারা বছর কেমন বরফ-মোড়া থাকে এই বিশাল চত্বর! এখানে নাকি বেশ কিছু পেঙ্গুইনও বাসা বেঁধে রয়েছে। ‘পেং-ফ্রেন্ড’ পাতানো যায় এদের সঙ্গে। শুধু এটুকুই নয়, ওদের ‘ম্যাজিক প্ল্যানেট’ নামের জায়গাটিতে ছড়িয়ে আছে বিচিত্র সব গেম। শুধু তোমাদের জন্য। |
কানাডার এডমন্টন-এ রয়েছে ওয়েস্ট এডমন্টন মল। উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বড় শপিং মল এটি। এতে রয়েছে বিশাল একখানি ওয়েভ পুল, মানে সমুদ্রেরই একটা ছোটখাটো সংস্করণ। খুদে থেকে বয়স্ক কেনাকাটার সঙ্গে দিব্যি সমুদ্রস্নান সেরে নেয়। উঁচু থেকে জলে ঝাঁপ দেওয়ার জন্য রয়েছে টুইস্টার আর সাইক্লোন। এই উত্তর আমেরিকারই আর একখানি মল হল ‘মল অব আমেরিকা’। মল-এর ভিতরেই তৈরি হয়েছে একটি থিম পার্ক। কিনতে এসে ডিজনিল্যান্ড-এর মতো মজা কুড়িয়ে নেওয়ার বন্দোবস্ত আর কী! পুচকে একটা গল্ফ কোর্স-এরও দেখা মিলবে এখানে। তবে সবচেয়ে চমৎকার জিনিসটা হল, এর অ্যাকোয়ারিয়মটি। লম্বা একটা সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এক এক করে মোলাকাত হবে হাঙর, কচ্ছপ, স্টিং রে-দের সঙ্গে। যারা আর একটু অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করে, তাদের জন্য রয়েছে স্নরকেলিং বা স্কুবা ডাইভিং-এর ব্যবস্থা।
জাপানের একটি মলের ঠিক মাঝখান দিয়ে আবার আস্ত একখানা কানাল বয়ে চলেছে। চার পাশে রঙিন বিল্ডিং আর মধ্যিখানে নদী নিয়ে যেন আস্ত এক শহর। নামও তা-ই, কানাল সিটি। কানালের মধ্যেই রয়েছে ফোয়ারা, যেটি প্রতি তিরিশ মিনিট অন্তর সময়ের জানান দেয়। আর এর পাশের স্টেজ-এ প্রায় প্রতি দিনই চলে নানা রকম পারফরমেন্স আর মিউজিক শো।
মালয়েশিয়ার একটি মল-এ পৌঁছলে আবার মনে হবে ঠিক যেন মিশর ঘুরতে এসেছ তুমি। পুরোটাই একটা পিরামিড-এর আদলে তৈরি। আর ঢোকার মুখে পাহারায় রয়েছে বিশাল এক সিংহ। ইতিউতি ছড়ানো রয়েছে হায়ারোগ্লিফিক্স আর ফারাও-দের মস্ত স্ট্যাচু। |