তাঁকে বলা হচ্ছে সাফ কাপের ‘ভীষ্ম’।
দীর্ঘ দিন এই টুর্নামেন্টে খেলার জন্য তাঁকে নজিরবিহীন ভাবে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টুর্নামেন্ট কমিটি। শনিবার তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘বা ফু ফে’-কে।
তিনিই বাইরের একমাত্র ফুটবলার যাঁর নামে নেপালে আছে ফ্যানস ক্লাব। ’৯৯-তে নেপালে নিজের দেশকে চ্যাম্পিয়ন করার পর যা তৈরি হয়েছিল।
আই এম বিজয়ন, ভাইচুং ভুটিয়ারা অবসর নিয়েছেন। কিন্তু তিনি এখনও জাতীয় দলের গোলের নীচে। বাংলাদেশের এ বারের চাম্পিয়ন টিম শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের অধিনায়ক। জিতেছেন ত্রিমুকুটও।
এত কিছুর পরও বিপ্লব ভট্টাচার্যের আক্ষেপ কলকাতায় গিয়ে না খেলার। “যে বছর আমরা সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম সে বার মোহনবাগান, মহমেডান আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তখন আবাহনীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলাম। ওরা ছাড়েনি। ওই আক্ষেপ কোনও দিন যাবে না। রুমিভাই, মুন্নাভাইরা ওখানে গিয়ে খেলতে পারল, আমি পারলাম না,” আক্ষেপ করছিলেন বছর চৌত্রিশের ছিপছিপে চেহারার কিপার। আলাদা কোনও আরোপিত গাম্ভীর্য নেই। কথা বললে আর পাঁচটা পাড়ার ছেলে মনে হবে তাঁকে। বোঝাই যায় না, সাফের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যে ন’বার টুর্নামেন্ট হয়েছে, প্রতিবারই বাংলাদেশের জার্সি পরে খেলে রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন। যা বিস্মিত করার মতো। “এ বারও যখন নেহরু কাপে দিল্লিতে খেলতে এসেছিলাম, গোয়ার একটা ক্লাব প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ভারতে খেলতে এলে কলকাতায় খেলব বলে তাতে সাড়া দিইনি।” বলছিলেন পেশাদার এই বঙ্গসন্তান। চট্টগ্রামে বাড়ি। এখন থাকেন ঢাকার ফ্ল্যাটে। উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে আত্মীয়রা আছেন। চাকরি করেননি ফুটবল খেলবেন বলে। শেষ প্রাক বিশ্বকাপ ম্যাচে দেশের অধিনায়কত্ব করেছেন। “সাফ কাপটা দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের কাছে বিশ্বকাপ। শুরু থেকে খেলছি। আগের তুলনায় এখন টিমগুলো অনেক বেশি শক্তি নিয়ে আসছে। কিন্তু টুর্নামেন্টের জৌলুস বাড়াতে পারেননি সংগঠকরা,” উপলব্ধি বিপ্লবের।
শনিবার সাফের উদ্বোধনী ম্যাচে নেপাল ২-০ হারাল বাংলাদেশকে। ৩১ মিনিটের মধ্যে দু’গোল। উপচে পড়া স্টেডিয়ামে দু’শো টাকার টিকিট কালোবাজারে এক হাজারে বিক্রি হল। ম্যাচে বিপ্লব খেলেননি। ছিলেন রিজার্ভ বেঞ্চে। কিন্তু কার্যত বুঝিয়ে দিলেন, আর নয়, এ বার জাতীয় দল থেকে অবসরই নেবেন। |