জঙ্গলমহলের উন্নয়নে চলছে বিভিন্ন প্রকল্প। জনসংযোগ বাড়তে হচ্ছে ফুটবল প্রতিযোগিতা, রক্তদান শিবির। এ বার সেই তালিকায় নয়া সংযোজন চক্ষু পরীক্ষা শিবির। সরকারি উদ্যোগে জঙ্গলমহলে শিবির করে চক্ষু সংক্রান্ত যাবতীয় চিকিৎসা হবে নিখরচায়। জঙ্গলমহলের তিনটি জেলার (পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া) ২৩টি মাওবাদী অধ্যুষিত ব্লকের মানুষ এই সুবিধে পাবেন।
পুরুলিয়া জেলার পাড়া অঞ্চলের স্বামী লোকেশ্বরানন্দ আই ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থাকে ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাস থেকেই শুরু হয়ে যাবে রোগী চিহ্নিতকরণের কাজ। তারপর তাঁদের সরকারি খরচেই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হবে। প্রথম ধাপে জঙ্গলমহলের ৫৯৮টি জায়গায় শিবির করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে শিবির থেকে রোগী চিহ্নিত করা হবে। প্রথম ধাপে ৯২০০ জনের অস্ত্রোপচারও করা হবে। তার জন্য ১ কোটি ৬৭ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা বরাদ্দও করেছে স্বাস্থ্য দফতর। |
রানিবাঁধ ব্লকের মিঠাআম গ্রামে চক্ষু পরীক্ষা ও চিকিৎসা শিবির হল শুক্রবার।
স্থানীয় মিঠাআম আদিবাসী মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং স্বামী লোকেশ্বরানন্দ
আই ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এই শিবিরটি হয়। শিক্ষাকেন্দ্রের প্রধানশিক্ষক
প্রশান্তকুমার মল্লিক জানান, প্রায় ২০০ জনের চক্ষু পরীক্ষা ও চিকিৎসা করা হয়।
এসেছিলেন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী নেতা রাজারাম সোরেনের দিদি অঞ্জলিও। —নিজস্ব চিত্র |
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন হাসপাতালে কবে চক্ষু পরীক্ষা শিবির হবে তা আগে থেকেই সেই সমস্ত এলাকায় জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও হাসপাতালে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত আসা রোগীদেরও তা জানানো হবে। স্বাস্থ্য দফতরের গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ধরনের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জানিয়ে দেবেন, যাঁদের চোখ নিয়ে সামান্যও সমস্যা রয়েছে, তাঁরা যেন ওই দিন চক্ষু পরীক্ষা শিবিরে যান। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “এভাবেই রোগীদের শিবিরে নিয়ে আসা হবে। শিবিরে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার বিশেষজ্ঞেরা থাকবেন। থাকবেন আমাদের সরকারি চিকিৎসকেরাও। পরীক্ষা করে দেখা হবে চোখের মূল সমস্যাটা কী। অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে, তা করা হবে। শুধু চিকিৎসায় সেরে গেলে সে ব্যবস্থাও করা হবে।” ইতিমধ্যেই বরাদ্দ অর্থের ৫০ শতাংশ অর্থ সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে চক্ষু পরীক্ষার কাজ শুরু হয়ে যাবে। |