ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা গিয়েছে আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়। মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ২০ জন মতো ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। বিভিন্ন পুরসভা ও ব্লক আধিকারিকদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে এলাকা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর আগে অন্ডাল ও দুর্গাপুরেও বেশ কয়েকজন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মেলে। অন্ডালের দীর্ঘনালা গ্রামে এক জনের মৃত্যুও হয়েছিল।
মহকুমা সহ-স্বাস্থ্য আধিকারিক অরিতা সেন চট্টরাজ শুক্রবার জানান, বেশ কিছু দিন ধরেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলছে। তবে যত রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন তত তথ্য তাঁদের কাছে নেই। কারণ বেশির ভাগই মহকুমা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন না। তবুও যে সব অঞ্চল থেকে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলছে সেখানে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী পাঠিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ, ওষুধ সরবরাহ সবটাই করা হচ্ছে বলে অরিতাদেবীর দাবি।
আসানসোল পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকাতেও ডেঙ্গি আক্রান্ত একাধিক রোগীর খবর পাওয়া গিয়েছে বলে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। পুরসভার চিকিৎসক অজয়কুমার সেন জানান, গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় ১৬ জনের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর তাঁরা পেয়েছেন। সেই এলাকাগুলিতে বারবার স্বাস্থ্যকর্মীর দল পাঠানো হয়েছে ও নিকাশি পরিস্কার রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। |
রাস্তা ঢাকা পড়েছে জঞ্জালে। আসানসোলের নিশ্চিন্তা গ্রামে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি। |
কিন্তু এত বার পরিচ্ছন্নতার আবেদন জানানোর পরেও আসানসোলের বেশ কিছু পুর এলাকায় রাস্তার ধারে আবর্জনা, অপরিস্কার নর্দমার দেখা মিলেছে। যেমন, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের নিশ্চিন্তা গ্রাম। শুক্রবার ওই এলাকায় গিয়ে জানা যায়, গত এক মাসে ১০ জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতার বিভিন্ন নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন ডেঙ্গি হয়েছে। সুস্থ হয়ে ফিরেও এসেছেন অনেকে। গ্রামের জয়দীপ রায় ও রূপচাঁদ চক্রবর্তীর অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন তাঁরা। কিন্তু মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর বা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ কেউই গ্রামে আসেনি। পরে কলকাতা গিয়ে চিকিৎসা করান তাঁরা। গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, গ্রামে নিকাশি ব্যবস্থা বলে কিছু নেই। যেখানে সেখানে আবর্জনার স্তুপ। ফলে মশা, মাছি, পোকামাকড়েকর উপদ্রবে অতিষ্ঠ তাঁরা।
কিন্তু এই দৈন্য কেন? ওই ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত সিপিএম কাউন্সিলর মন্দিরা টুডু বলেন, “পুরসভার কাছে ডেঙ্গি মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীর দল পাঠানোর আবেদন করেছি। এছাড়া এলাকায় প্রতিরোধক ছড়ানো, স্বাস্থ্য শিবির বসানো ও এলাকা সাফসুতরো করে নিকাশি ব্যবস্থার উন্নত করার কথা বলেছি। কিন্তু অনুরোধই সার। পুর কর্তৃপক্ষের কোনই হেলদোল নেই।” পুরসভা আগ্রহ না দেখানোয় বাসিন্দারাই জঞ্জাল সাফাই ও নিকাশির কাজ করছেন। প্রতিষেধকও ছড়াচ্ছেন।
পুরসভার চিকিৎসক অজয়বাবুর দাবি, তিনি এ সব অনুরোধের বিষয়ে কিছুই জানেন না। মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ও কাজে ব্যস্ত থাকায় এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। |