বাগান নিয়ে জট কাটাতে প্রশাসনিক বৈঠকের দিনই বাগান বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে ডুয়ার্সের কিলকট চা বাগান ছেড়ে চলে গেলেন মালিকপক্ষ। বকেয়া পাওনা, আবাসন সংস্কার-সহ নানা দাবিতে গত ২৬ অগস্ট থেকে সকালে বিকেলে বাগানে গেট সভা শুরু করেছিল অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের চা শ্রমিক সংগঠন পিটিডব্লুইউ। সমস্যা সমাধানে শুক্রবার শ্রমিক-মালিকপক্ষকে ডেকে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকেছিল জেলা শ্রম দফতর। যদিও এদিন সকালে বাগানের কারখানায় গেলে শ্রমিকরা দেখেন বাগান বন্ধের নোটিশ লাগানো রয়েছে। সেই সঙ্গে মালিকপক্ষও বৃহস্পতিবার রাতে বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলে শ্রমিকেরা জানতে পারেন।
ডুয়ার্সের মেটেলি ব্লকের এই চা বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুজোর মুখে বাগানের ১১০০ শ্রমিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়লেন বলে শ্রমিক সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে। যদিও কাজ বন্ধের নোটিশে বাগান কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, প্রতিদিন গেট সভার কারণে বাগানের মোট সাড়ে ১৭ ঘণ্টা কাজের সময় নষ্ট। কর্তৃপক্ষের আধিকারিক, প্রতিনিধিদেরও কয়েক দফায় ঘেরাও করে রাখা হয়। সে কারণে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। এই সব কারণ দেখিয়ে মালিক বাগান ছাড়তে ‘বাধ্য’ হন বলে দাবি করা হয়েছে। |
মালবাজারের মহকুমা শাসক জ্যোর্তিময় তাঁতি বলেন, “সব মহলের সঙ্গে কথা বলে জট কাটানোর চেষ্টা করছি।” মালবাজারের সহাকারি শ্রম আধিকারিক শ্যামল রায়চৌধুরী বলেন, “বৈঠকের দিন সময় চূড়ান্ত হবার বিষয়টি বাগান কর্তৃপক্ষ জানতেন। তারপরেও তাদের বাগান ছেড়ে চলে যাওয়াটা অত্যন্ত দূর্ভাগ্যজনক।”
অন্যদিকে, কিলকোট চা বাগানের ম্যানেজার অভিজিৎ রাহার মোবাইল ফোন বন্ধ। বাগানে তাঁর আবাসনও তালা বন্ধ। এই বাগান কর্তৃপক্ষ এখনও কোন মালিক সংগঠনের সদস্য নন।
২৬ অগস্ট থেকে ১৪ দফা দাবিতে বাগানে ২ ঘণ্টা করে গেট সভা করতে শুরু করে শ্রমিক সংগঠন। মূলত শ্রমিক আবাস নির্মান-সংস্কার, বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা, ৩৩ মাসের বকেয়া পিএফ এবং ৫ বছরের বকেয়া গ্র্যাচুইটির টাকার হিসেব দাবি করা হয়। পাশাপাশি, কিটনাশক ছেঁটানোর কাজ করার সময় জুতো, মুখোশের মতো সুরক্ষার ব্যবস্থা, বকেয়া রেশন দেবার ব্যবস্থা, জ্বালানি ও চা পাতার নিয়মিত যোগানেরও দাবি করা হয়। দাবি পূরণের লিখিত আশ্বাস না পেলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে বলে শ্রমিক সংগঠনের তরফে বলা হয়।
বাগানের প্রোগ্রেসিভ টি ওয়ার্কাস ইউনিয়ন ইউনিট সম্পাদক রামচন্দ্র প্রজা ও সহ সম্পাদক দীনেশ মৃধা বলেন, “সামনেই পুজো। দ্রুত বোনাসও দিতে হবে বাগান কর্তৃপক্ষকে। তাই কর্তৃপক্ষ বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন।” |