গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনে সব নির্বাচিত প্রতিনিধিকেই হাজির থাকতে হবে বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার তাঁর নির্দেশে জানান, পঞ্চায়েত ভোটে জয়ী কোনও প্রতিনিধি যদি জেল বা পুলিশি হেফাজতে থাকেন, নতুন বোর্ড গঠনের সময় তাঁদেরও সেখানে হাজির থাকার ব্যবস্থা করতেই হবে।
পাঁচ দফার পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা ও রক্তপাতের অনেক ঘটনা ঘটেছিল। ফল বেরোনোর পরেও বিক্ষিপ্ত ভাবে সংঘর্ষ হয়। বিভিন্ন জায়গায় বোর্ড গঠনের মুখে নানান অভিযোগে শুরু হয় ধরপাকড়। সেই সূত্রে বোর্ড গঠন নিয়ে হাইকোর্টে মামলার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। অধিকাংশ মামলায় দেখা যাচ্ছে, যে-সব ক্ষেত্রে শাসক ও বিরোধী দলের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সংখ্যায় ফারাক কম, সমস্যা হচ্ছে সেই সমস্ত জায়গাতেই। সেই সব এলাকায় পুলিশ বিভিন্ন অভিযোগে নির্বাচিতদের গ্রেফতার করছে। অনেক নির্বাচিত প্রার্থী গ্রেফতারি এড়াতে গ্রাম
ছাড়ছেন। এই অবস্থাতেই বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।
শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ ও বারাসত-২ পঞ্চায়েত সমিতির তরফে মামলা করা হয়েছে হাইকোর্টে। হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতিতে বামফ্রন্টের ১৩ জন, তৃণমূলের ১২ জন এবং কংগ্রেসের এক জন নির্বাচিত প্রতিনিধি আছেন। হিঙ্গলগঞ্জে আছেন বামফ্রন্টের ১৫ জন এবং তৃণমূলের ১২ জন। আর বারাসত-২ পঞ্চায়েত সমিতিতে বামফ্রন্টের ১৩ জন, তৃণমূলের আট জন এবং কংগ্রেসের ছ’জন নির্বাচিত প্রতিনিধি আছেন। আবেদনকারীর আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ওই তিন পঞ্চায়েত সমিতিতেই নির্বাচিত বাম প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে নানা ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন গ্রেফতারও হয়েছেন। গ্রেফতারি এড়াতে অনেকেই গ্রামছাড়া। এই অবস্থায় বোর্ড গড়া হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কেউ প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হতে পারবেন না।
বিচারপতি জানিয়ে দেন, পঞ্চায়েত নতুন বোর্ড গড়ার জন্য সব নির্বাচিত প্রার্থীরই উপস্থিতি দরকার। নির্বাচিত কোনও প্রতিনিধি জেল বা পুলিশি হেফাজতে থাকলেও বোর্ড গঠনের দিন তাঁর হাজিরার ব্যবস্থা করতে হবে এবং তিনি বোর্ড গড়ার ক্ষেত্রে নিজের ভোট দিতে পারবেন।
এ দিনই সল্টলেকের এইচসি ব্লকের যৌথ প্রশাসনিক ভবনে পাকাপাকি ভাবে উঠে গেল পঞ্চায়েত দফতর। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, কর্পোরেট ধাঁচের ওই অফিসে কর্মীদের হাজিরার খতিয়ান রাখার জন্য বৈদ্যুতিন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। যৌথ প্রশাসনিক ভবনের চারটি তলা নিয়ে তৈরি হয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। তবে দফতর উঠে গেলেও পঞ্চায়েত অধিকর্তার অফিস এবং জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন (এনআরএলএম)-এর অফিস থেকে যাচ্ছে জেসপ ভবনেই।
রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের জন্য সরকারি আবাসন গড়া হবে বলে এ দিনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক হয়েছে, আলিপুরের হেস্টিংস এলাকায় ওই দুই সরকারি শীর্ষ কর্তার আবাসন তৈরি হবে। সেই সঙ্গে রাজ্যের প্রধান সচিবদের জন্য রাজারহাটে পাঁচ একর জমিতে পৃথক একটি আবাসন তৈরির নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। |