ট্রেনের দরজার সামনে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া চলছিল। হঠাৎ ট্রেন থেকে নীচে ছিটকে পড়েন স্বামী। ঝাঁপ দেন স্ত্রী-ও। রেলকর্মীরা তাঁদের উদ্ধার করলেও বাঁচানো যায়নি স্ত্রীকে। সারা দেহে আঘাত নিয়ে স্বামী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শুক্রবার বিষ্ণুপুর হাসপাতালের শল্য বিভাগে শুয়ে আগের দিন সন্ধ্যায় ট্রেন থেকে তাঁদের রেললাইনে পড়ে যাওয়ায় এই ঘটনার কথা শোনাচ্ছিলেন স্বামী উওম কর্মকার। হাসপাতালে জ্ঞান ফিরতে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে জানতে পারেন তাঁর স্ত্রী মাধবী কর্মকারের (৩০) মৃত্যু হয়েছে। চন্দ্রকোনার অপর্ণা পল্লিতে তাঁদের বাড়ি। উত্তম শোনাচ্ছিলেন, তাঁরা স্বামী-স্ত্রী রেললাইনের পাশ থেকে প্লাস্টিকের বোতল কুড়িয়ে বিক্রি করে সংসার চালাতেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বোতল কুড়িয়ে পিয়ারডোবা স্টেশনে তা বস্তায় ভরে সন্ধ্যায় কটি প্যাসেঞ্জার ট্রেনে তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন। এর কিছু পরেই গণ্ডগোল হয়। উত্তমের কথায়, “ট্রেনের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে মুড়ি খেতে খেতে খরচপাতি নিয়ে আমাদের দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। হঠাৎ পিছনে কিসের ধাক্কা খেয়ে দরজা টপকে নীচে পড়ে যায়। স্ত্রী-ও আমার উপরে এসে পড়ে। তারপর আর কিছু মনে ছিল না।” বাড়িতে রয়েছে উত্তমবাবুর বৃদ্ধা মা ও দুই ছেলেমেয়ে। তাঁদের কী ভাবে খবর দেওয়া যায়, তাই নিয়ে উদ্বেগে তিনি।
রেলপুলিশের বাঁকুড়ার ওসি সুভাষচন্দ্র জানা বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গড়বেতা ও পিয়ারডোবা রেল স্টেশনের মাঝে তাঁদের উদ্ধার করেন রেলকর্মীরা। বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা ওই মহিলাকে মৃত বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর পুরুষ সঙ্গী বেহুঁশ থাকায় পরিচয় জানা যায়নি। পরে তা জানতে পেরে গড়বেতার রেল পুলিশের মাধ্যমে ওই ঠিকানায় খবর পাঠানো হয়েছে।” তিনি জানান, রেলপুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। |