মুর্শিদাবাদে দলের কার্যকরী সভাপতি হিসেবে হুমায়ুন কবীরকেই বেছে নিল তৃণমূল। দলে এসেই গত নভেম্বর মাসে মন্ত্রী হয়েছিলেন কংগ্রেসেরে ওই বিধায়ক। উপনির্বাচনে হেরে গিয়ে সাড়ে চার মাসের মন্ত্রীত্ব খোয়ালেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুর্শিদাবাদে ‘বড়’ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকেই। কিন্তু সেখানেও ভরাডুবি হয় শাসকদলের। তা সত্ত্বেও দলনেত্রী যে হুমায়ুনের উপরে আস্থা হারাননি তাঁকে জেলার ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েত সমিতির জট কাটানোর ‘দায়িত্ব’ দিয়ে সে কথাই বুঝিয়ে দিল তৃণমূল।
মুর্শিদাবাদ বরাবরই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। এ বার সেখানে বামেরাও ভাল ফল করেছে। এ বার সেখানে বহরমপুর, হরিহরপাড়া ও রানিনগর পঞ্চায়েত সমিতি গড়তে কংগ্রেসকে সাহায্যের ইঙ্গিত দিয়ে সাসকদল কি জোটের সম্ভাবনাই খোলা রাখতে চাইছে? হুমায়ুন বলেন, “জেলার তিনটি ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল নির্নায়ক শক্তি। রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই পঞ্চায়েত সমিতিগুলিতে বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে সিপিএমকে আমরা কোনওমতেই সমর্থন দেব না। তবে কংগ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা নেতৃত্বের কাছে সমর্থন চাইলে আমরা সমর্থন দেব।” সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে রাখছেন, “তবে আমাদের জয়ী প্রার্থীদের যদি কেউ পিছনের দরজা দিয়ে দলে টানতে চায় তাহলে আমরা কড়া মনোভাব দেখাব। কেউ দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অবশ্য এ ব্যাপারে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, শাসক দলের সাহায্যে তাঁরা পঞ্চাতে সমিতি গঠন করতে চায় না। জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “এ বিষয়ে অধীর চৌধুরী অনেক আগেই তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি বাতিল করে দিয়েছেন। জেলায় সিপিএমের ‘বি’ টিম হল তৃণমূল। সিপিএম ও তৃণমূলের বিরোধীরাই কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন। তাঁদের সমর্থনকে সম্মান দিতে আমরা তৃণমূলের সঙ্গে কোনওরকম গাঁটছড়া বাঁধব না।”
৩০ ও ৩১ তারিখে পঞ্চায়েত সমিতি গঠনের জন্য দিন। বহরমপুর, রানিনগর-১, হরিহরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল নির্নায়ক ভূমিকা নিতে পারে বলে জল্পনাও তুঙ্গে। এর মধ্যে বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির ৫১টি আসনের মধ্যে ২৫টি আসন পেয়েছে বামফ্রন্ট। ২৩টিতে জিতেছে কংগ্রেস। ৩টি গেছে তৃণমূলের ঝুলিতে। অন্য দিকে রানিনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট ১৮টি আসনের মধ্যে ৮টি করে পেয়েছে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। দু’টি আসন তৃণমূলের। হরিহরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টি আসনের মধ্যে ১৩টি করে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস দখল করেছে। বাকি ৪টিতে তৃণমূলের। |