খোদ পরিবেশমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার স্বীকার করে নিয়েছেন, স্পঞ্জ আয়রন কারখানা থেকে দূষণ ছড়ানো পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। তবে ওই দূষণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলার স্পঞ্জ আয়রন কারখানা থেকে বিষাক্ত দূষণ থেকে ছড়াচ্ছে বলে সম্প্রতি বিধানসভায় অভিযোগ জানান গলসির সিপিএম বিধায়ক সুনীল মণ্ডল। তবে ওই অভিযোগ ঠিক নয় বলে মনে করছেন পর্ষদের কর্তারা।
সোমবার বিধানসভার অধিবেশনে স্পঞ্জ আয়রন কারখানা থেকে দূষণ ছড়ানোর প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন সুনীলবাবু। এই ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি। তাঁর বক্তব্যের পরিপ্রক্ষিতে পরিবেশমন্ত্রী সুদর্শনবাবু বিধানসভায় জানান, পরিবেশ দফতরের পক্ষ থেকে কারখানাগুলিতে দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বসানো হয়েছে। তবে তাঁর দফতর নিয়ন্ত্রণ জারি রেখে মাত্র ২০ শতাংশ দূষণ কমাতে পেরেছে।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ তা হলে অন্য রকম কথা বলছে কী ভাবে?
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান বিনয় দত্ত শুক্রবার বলেন, “গত এক বছরে ওই সব এলাকার স্পঞ্জ কারখানা থেকে দূষণ ছড়ানোর ব্যাপারে একটাও অভিযোগ আমাদের দফতরে জমা পড়েনি।” যদিও তার আগের বছর স্থানীয় বেশ কিছু মানুষ দূষণ ছড়ানো নিয়ে টেলিফোনে এবং লিখিত ভাবে পর্ষদের কাছে দফায় দফায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন বলে চেয়ারম্যান জানান। তাঁর কথায়, “সেই সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে এক বছর ধরে স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় নিয়মিত নজরদারি রাখা হয়েছিল। তাতেই সুফল মিলেছে।”
এ দিন বিনয়বাবু জানান, যে-সব এলাকায় স্পঞ্জ আয়রন কারখানা আছে, সেখানকার পরিবেশে প্রধানত সালফার-ডাই-অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন-অক্সাইড পাওয়া যায়। এগুলো বেশি মাত্রায় থাকলে দূষণ ছড়ায়। এখন ওই সব এলাকায় এই দু’টি রাসায়নিকের পরিমাণ সহনসীমার অর্ধেকেরও কম। এ ছাড়া ওই এলাকার গড় ধূলিকণার পরিমাণ ১০৫ ইউনিট, যা স্বাভাবিকের তুলনায় মাত্র পাঁচ ইউনিট বেশি। বিনয়বাবু বলেন, “এই অবস্থায় ওই সব এলাকার দূষণ নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই।” তবে কারখানাগুলি যাতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি মেনে চলে, সেই ব্যাপারে কড়া নজরদারি চালিয়ে যেতে চান পর্ষদ-কর্তৃপক্ষ।
|