|
|
|
|
অবৈধ বালি ব্যবসা রুখতে নতুন আইন |
স্বপন সরকার • পটনা |
নদীর চর থেকে বেআইনি বালি খনন রুখতে নয়া আইন তৈরির পথে এগচ্ছে বিহার সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মাফিয়া-চক্রের মোকাবিলায় ওই আইনকেই অস্ত্র করা হবে। মন্ত্রিসভার পরবর্তী বৈঠকে অনুমোদন পেলেই তা কার্যকর করা হবে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এরপর থেকে নদী থেকে বালি তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের বাধ্যতামূলকভাবে কেন্দ্র এবং রাজ্যের পরিবেশ দফতরের অনুমতি নিতে হবে। নতুন আইনে ই-টেন্ডার, অন-লাইন নজরদারি ব্যবস্থাও থাকবে। খনি ও ভূতত্ত্ব দফতরের সচিব বি পি প্রধান বলেন, “ওই আইনকে বিজ্ঞানভিত্তিক করার চেষ্টা চলছে।”
নদীখাত থেকে বালি উত্তোলনের ‘ব্যবসা’র কর বাবদ গত আর্থিক বছরে ৫১১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে রাজ্য সরকার। চলতি আর্থিক বছরে ওই খাতে ৬৪১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। বালি তোলার জন্য বেশি রাজস্ব আদায় হয় পটনা, সারন এবং ভোজপুর থেকে। সরকারের আশা, নতুন আইন চালু হলে ওই খাতে তিন গুণ রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে।
প্রশাসন জানিয়েছে, নতুন আইনে নদীর চর থেকে বালি তোলার জন্য ‘স্টেট এনভায়রনমেন্ট ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট অথরিটি’-র অনুমতি বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। কোনও ঠিকাদার পাঁচ হেক্টরের কম পরিমাণ জমি থেকে বালি তুললেও অনুমতির প্রয়োজন হবে। এতদিন বন দফতরের অনুমতি পেলেই সে কাজ করা যেত। ১০০ একরের বেশি পরিমাণ জমি থেকে বালি সংগ্রহ করতে হলে দিল্লির দ্বারস্থ হতে হবে বালি-ঠিকাদারদের। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বন এবং পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র জরুরি। ছোট-বড় সব বালি ব্যবসায়ীকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসতে চায় সরকার।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারের ১১টি জেলায় বালি সংগ্রহের জন্য পৃথক ‘লিজ-জোন’ তৈরি হবে। মন্ত্রিসভার কাছে পাঠানো প্রস্তাবে জোনগুলিকে স্বনির্ভর করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। যাতে সে গুলি আলাদা-আলাদাভাবে লাভজনক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। প্রতিটি জোনের লাভ-লোকসানের হিসেব রাখবে সরকার। রাজ্যে বালি খননের জন্য টেন্ডার, লিজ-সহ সমস্ত বিষয়ে নজর রাখতে একটি সংস্থাও তৈরি করবে রাজ্য। টেন্ডার থেকে শুরু করে লিজ দেওয়ার কাজে তদারকি করবে ওই সংস্থাটিই। রাজ্যজুড়ে বালি-মাফিয়াদের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ, খুনের জেরে কয়েক বছরে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মাফিয়াদের পিছনে মদত রয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতাদেরই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ বার উদ্যোগ নিল বিহার সরকার। প্রশ্ন উঠছে, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক সদিচ্ছার অভাব থাকলে, শুধুমাত্র আইন দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সমস্যার। লক্ষ্মীসরাই, সারন, ভোজপুর, নওয়াদা এবং পটনায় দাপটে ঘুরছে বালি মাফিয়ারা। |
|
|
|
|
|