|
|
|
|
গোষ্ঠী কোঁদলে জেরবার কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
এক বিধায়কের রাগ, পুলিশের দু’রকম ভাষ্য ও চা-জনগোষ্ঠীর ভোট সমীকরণকে ঘিরে ফের দ্বিধাবিভক্ত রাজ্য রাজনীতি। পুলিশ পেটানোয় অভিযুক্ত কংগ্রেস বিধায়ক রূপজ্যোতি কুর্মিকে গ্রেফতার করা হলে রীতিমতো পদত্যাগ ও আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন বেশ কয়েকজন বিধায়ক। রাজ্য কংগ্রেসে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বনাম গগৈ-বিরোধী বিধায়কদের টানাপোড়েন এমনই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সাংবাদিক সম্মেলনে গগৈয়ের কটাক্ষ, “একজন বিধায়ক ভয় দেখালেই আমি ভয় পাই, তিরিশজন মিলে ভয় দেখালে ভয় তো পেতে হবে।”
মরিয়ানির দু’বারের বিধায়ক রূপজ্যোতি প্রদেশ কংগ্রেসে গগৈ-বিরোধী শিবিরের সদস্য হিসেবেই পরিচিত। গত মাসে অসম-নাগাল্যান্ড সীমাবর্তী মরিয়ানিতে আধাসেনার হাতে মার খেয়ে রাগে প্রায় হপ্তাখানেক পথ অবরোধ চালিয়েছিলেন রূপজ্যোতি ও তাঁর দলবল। এ বার ২০ অগস্ট রাতে, কাটালিবাড়ি চা-বাগানের সামনে পুলিশের একটি গাড়ির সঙ্গে তাঁর গাড়ির ধাক্কা লাগার উপক্রম হয়। অভিযোগ, তিনি পুলিশের গাড়িটি থামিয়ে এক সহকর্মীর হেলমেট দিয়ে চালক কমল লাহনকে জখম করেন। পুলিশ রূপজ্যোতির নামে মরিয়ানি থানায় জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়া নয়, অসম পুলিশের বিরুদ্ধে নাগাড়ে মুর্দাবাদ ধ্বনি তোলেন রূপজ্যোতি। ঘটনার পরে এসপি সংযুক্তা পরাশর বলেছিলেন, “বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। রূপজ্যোতি উধাও, তাঁর খোঁজ চলছে।” রূপজ্যোতি পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, তিনি বাগানে বাগানে ঘুরছেন। পুলিশ তাঁকে খুঁজে না পেলে সেটা তাদের অপদার্থতা। পুলিশ মিথ্যা ফাঁসাতে চাইছে।
ঘটনার পরেই পরিষদীয় সচিব চন্দন সরকার, বিধায়ক পল্লব লোচন দাস, জয়ন্তমল্ল বরুয়া প্রমুখ বিধায়ক সরাসরি জানান, বিনা দোষে কুর্মিকে গ্রেফতার করলে তাঁরা এক যোগে পদত্যাগ করবেন। গগৈ-বিরোধী শিবিরের এই বিধায়কদের সংখ্যা প্রায় ৩০। পাশাপাশি, রাজ্যের এক তৃতীয়াংশ ভোট চা-জনগোষ্ঠীর হাতে থাকায়, চা-নেতা কুর্মিকে গ্রেফতার করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সব দিক থেকেই তাই চাপে পড়েন গগৈ। বিরোধীদের কয়েকজন দিল্লিতেও চলে যান। এর পরেই ডিজি জয়ন্তনারায়ণ চৌধুরী জানান, “ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, পুলিশ প্রহারে কুর্মি সরাসরি জড়িত নন।”
এই প্রেক্ষিতে তরুণ গগৈ কী বলছেন? কয়েক দিন আগে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তরুণ গগৈ বলেন, “ডিজিপি যদি কিছু জেনে থাকেন, তা আমায় জানানো উচিত ছিল। আমি এখনই এ নিয়ে মন্তব্য করব না। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে সব সত্য জানা যাবে।” পুলিশ সূত্রে খবর, কুর্মির ১২ জন নিরাপত্তারক্ষীকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। |
|
|
|
|
|