|
|
|
|
লগ্নি কেলেঙ্কারি |
সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেই টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করবে অসম |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গের মতো পাঁচশো কোটি টাকার তহবিল না গড়লেও, বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে যে টাকা পাওয়া যাবে তা থেকেই ‘প্রতারিত’ মানুষদের যতটা সম্ভব টাকা ফেরত দিতে উদ্যোগী হয়েছে অসম সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ আগেই জানিয়েছিলেন, “এই সব সংস্থায় টাকা রেখে যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, সরকারি তহবিল থেকে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য জনগণের কাছ থেকে বাড়তি কর আদায়ও করা হবে না। তবে কী ভাবে প্রতারিত মানুষগুলিকে খানিকটা স্বস্তি যাতে দেওয়া যায় তা আমরা খতিয়ে দেখছি।” ইতিমধ্যে এই ধরণের একাধিক সংস্থার প্রতারণার ঘটনায় গৌহাটি হাইকোর্টে পাঁচটি জনস্বার্থের মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে একটি মামলা হাইকোর্টের তরফে সুয়ো মটোই দাখিল করা করেছিল। এরই পাশাপাশি, দু’টি লগ্নিকারী সংস্থার রিট পিটিশনও হাইকোর্টে জমা পড়ে।
চলতি বছরের ২২ এপ্রিল হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে আদেশ দেয়, এ ধরনের সংস্থাগুলির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা থেকে লগ্নীকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক। গত কাল প্রধান বিচারপতি আদর্শকুমার গোয়েল ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার এজলাসে সমস্ত মামলা একত্র করে শুনানি হয়। সেখানেই রাজ্য সরকারের তরফে হলফনামা পেশ করে জানানো হয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে টাকা ফেরত দেওয়ার একটি প্রস্তাব তারা তৈরি করেছে। সরকারি প্রস্তাবে বলা হয়েছে: জেলা ভিত্তিক কমিটি গড়ে, প্রতি জেলায় প্রতারিত লগ্নিকারীর সঠিক সংখ্যা ও লগ্নিকারী সংস্থার নাম-ঠিকানা, বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির হিসেব সংগ্রহ করা হবে। এরপর টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়াটি নির্ধারণ করবে সরকার। কমিটি তৈরি, কমিটিতে কারা থাকছেন ইত্যাদি বিষয়ে আগামী এক মাসের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য গোয়েল ও ভুঁইঞার ডিভিশন বেঞ্চ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। এ ছাড়া, কী পদ্ধতিতে রাজ্য সরকার টাকা ফেরত দেওয়ার পরিকল্পনা করছে তাও এক মাসের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
অসম পুলিশের ডিজি জয়ন্তনারায়ণ চৌধুরী আদালতে যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী রাজ্যের বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত ৯৩ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রায় ২৪ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক ও অন্যত্র থাকা অর্থ আটক করা হয়েছে। সিল করা হয়েছে বেশ কিছু স্থাবর সম্পত্তিও। অসম পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল এ সংক্রান্ত ১৯২টি মামলার তদারক করছে। বেশ কিছু মামলার তদন্তের জন্য সরকার ইতিমধ্যেই সিবিআইকে অনুরোধ করেছে। তবে সিবিআই এখনও তদন্তভার নেয়নি।
এপ্রিল অবধি বিশেষ তদন্তকারী দল ও পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী: রাজ্যে মোট ১২৮টি সংস্থার বিরুদ্ধে মোট ২২২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১৭টি মামলায় ১৫টি সংস্থার ৪২ জনের নামে চার্জশিটও গঠন করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩০৩ জনকে। ১০৬টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২৪ কোটি টাকা রয়েছে, সেগুলির লেনদেন সরকার বন্ধ করেছে। ৯৯ বিঘা জমি ও বেশ কিছু দফতর, বাড়ি, কারখানাও চিহ্নিত করে ‘সিল’ করা হয়েছে। |
|
|
|
|
|