গত সাত দিন ধরে জল জমে রয়েছে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল, উদয়াচল এলাকায়। রাস্তার কোথাও কোথাও এক-হাঁটু জল দাঁড়িয়ে। এক তলার ঘর জল থইথই। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা জল নামাতে উদ্যোগী হয়নি। টানা কয়েক দিন রোদের আশায় বসে আছেন তাঁরা।
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বাগুইআটির পূর্বাচল, উদয়াচল এলাকার বাসিন্দারা কার্যত জলবন্দি। পূর্বাচলের এক গৃহবধূ কবিতা মল্লিকের বসার ঘরে জল। ফ্রিজের স্ট্যান্ড জলে ডুবে রয়েছে। তাঁর কথায়: “এ বারের বর্ষায় ঘরের জল নামছেই না। কয়েক দিন বৃষ্টি থেমেছিল। তখন জল কিছুটা কমেছিল। কিন্তু আবার টানা বৃষ্টির পরে যে-কে-সেই। দোতলায়ই থাকছি। কিন্তু রান্না করতে তো এক তলায় নামতেই হচ্ছে।” |
কয়েকটি বাড়ির পরে সোনালি দাসের বাড়িরও প্রায় একই অবস্থা। এখানে জলের সঙ্গে সাপও ঢুকেছিল। তরকারির ঝুড়ি থেকে আলু বের করতে গিয়ে সাপ বেরিয়ে পড়ে। এই ঘটনার পরে সোনালিদেবী বাচ্চাদের আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। জোঁকের সমস্যায় ভুগছেন মঞ্জুশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় নামে ওই এলাকার আর এক বাসিন্দা। তিনি পেশায় অভিনেত্রী। বাড়িতে নাচের স্কুলও চালান। তিনি বলেন, “নাচের ক্লাসের বাচ্চাদের কাঁধে করে অভিভাবকেরা পৌঁছে দিয়ে যাচ্ছেন। বসার ঘরের টেবিল-চেয়ারের তলায় জল।”
ইভা পাল নামে এলাকার এক বাসিন্দা জানালেন, জল জমে বিদ্যুতের লাইন শর্ট-সার্কিট হয়ে গিয়েছিল। তাঁর কথায়: “আর একটু হলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতাম। জোর বেঁচে গিয়েছি।” এলাকাবাসীর প্রশ্ন, এমন বৃষ্টিতে জল জমতেই পারে। কিন্তু এত দিন পরেও জল নামছে না কেন? |
তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার তরফে কেউ এলাকায় আসেননি। স্থানীয় কাউন্সিলরকে অনেক বার ফোন করা হয়েছে। অফিসে গিয়ে তাঁরা দেখাও করেছেন। কিন্তু তিনি আসেননি।
স্থানীয় কাউন্সিলর কংগ্রেসের মৃণাল সর্দার বলেন, “আমরা অসহায়। পাশের খাল উপচে পড়েছে। এই খাল আবার লোয়ার বাগজোলায় মিশেছে। তার অবস্থাও খারাপ। টানা পাম্প চালিয়েও একটু একটু করে জল নামছে।” রাজারহাট-গোপালপুরের চেয়ারম্যান সিপিএমের তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জানি, এলাকার অবস্থা খুব খারাপ। দু’টি পাম্প চলছিল। আরও একটি পাম্প বসানো হয়েছে। খালের যা অবস্থা তাতে জল নামতে একটু সময় লাগবে।” |