কাজে ত্রুটি, মানছেন প্রাক্তন পুরপ্রধান
পুরসভা গঠিত হয়েছে ১৯৭৫ সালে। এই সময়ের মধ্যে বাম-ডান মিলিয়ে অনেক মনোনীত ও নির্বাচিত সদস্যরা পুরবোর্ডে এসেছেন। কিন্তু সব ওয়ার্ডে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছয়নি এবং সঠিক নিকাশি ব্যবস্থাও গড়ে ওঠেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা। এ জন্য গত দশ বছর ধরে পুরসভায় ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস বোর্ডের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে সিপিএম। এমনকী বিদায়ী পুরপ্রধান-সহ কংগ্রেসের আধিকাংশ কাউন্সিলররা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগেই এই দু’টি বিষয় নিয়ে সরব ছিল তৃণমূলও।
পুরসভা সূত্রে খবর, ২০০৩ সালে বাম বোর্ডের সময় ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হলেও শহরের ১, ২ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে(আগে ওয়ার্ডগুলি ছিল ১১ ও ১৫) জল পৌঁছয়নি। আর আংশিক ভাবে জল পৌঁছে ছিল আরও দু’টি ওয়ার্ডে। আবার যেখানে জল পৌঁছেছে সেগুলির মধ্যে ৮, ১০, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডগুলিতে পর্যাপ্ত জল মেলে না বছরের বিভিন্ন সময়। সিপিএমের জোনাল সদস্য তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর শীতল বাউড়ির অভিযোগ, “এত বছর আগে বাম বোর্ডের সময় যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল সদিচ্ছার অভাবে সেটা সম্পূর্ণ করতে পারেনি কংগ্রেস বোর্ড।” তাঁর আরও অভিযোগ, “মাঝে বাকি থেকে যাওয়া ওয়ার্ডগুলিতে জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য পুরদফতর থেকে বহু বছর আগে প্রায় ৮৬ লক্ষ টাকা অনুমোদন পেলেও সেই টাকার একটা অংশ পুরসভাকে দিতে হতো বলে সেটা কার্যকর হয়নি। এমনকী দুবরাজপুর রেল সেতুর অন্য দিকে থাকা (১ ও ২) ওয়ার্ডগুলিতে জল পৌঁছনোর জন্য রেলের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার ব্যাপারেও গড়িমসি করেছে।” টাকা অনুমোদনের কথা স্বীকার করে নিয়ে বিদায়ী কংগ্রেস কাউন্সিলর শেখ নাজিরউদ্দিন বলেন, “পুরপ্রধানের উদাসীনতার জন্য বাস্তবায়িত হয়নি।”
`
বেহাল ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশি। —নিজস্ব চিত্র
বাসিন্দাদের আর একটি ক্ষোভের জায়গা নিকাশি। কোথাও মূল নর্দমা অসম্পূর্ণ, কোথাও কারও বাড়ির পেছেনে বা সরকারি খামারে বা অনুপযুক্ত জায়গায় শেষ করে দেওয়া হয়েছে নর্দমা। কোথাও নর্দমা কাঁচা থেকে গিয়েছে বা ভেঙে গিয়েছে। ফল হিসেবে বাসিন্দাদের হয় নোংরা জল ডিঙিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অথবা বর্ষার জল ও নর্দমার নোংরা জল ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। কাখনও বা বিভিন্ন ওয়ার্ডে জমে থাকা জলে মশা জন্মাচ্ছে।
কেন এই অসুবিধা? পরিকল্পনাহীন, এবং পছন্দের ঠিকাদারদের বরাত পাইয়ে দেওয়ার জন্য নর্দমা তৈরি করানোয় এই সমস্যা বলে শীতলবাবু এবং কিছুদিন আগে পর্যন্ত তৃণমূল এ ব্যাপারে অভিযোগ তুলে ছিল। তাই এতো বছর পরেও সঠিক নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। গত বোর্ডের জোটসঙ্গী বিজেপি নেতা সত্যপ্রকাশ তিওয়ারিও এই অভিযোগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাস্তার জায়গায় নর্দমা হয়েছে। নর্দমার জায়গায় রাস্তা হয়েছে।” এ দিকে, বিদায়ী পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “জলপ্রকল্পে এমন কোনও টাকা আসার কথা জানা নেই। তবে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে ২৬ কোটি টাকার অনুমোদন ইতিমধ্যেই মিলেছে। দরপত্রও ডাকা হয়েছে। ২০১৪-এর মধ্যে প্রতি ওয়ার্ডে জল পৌঁছে দিতে অজয় নদ থেকে আর একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। পুরভোটের জন্য তা শুরু হয়নি।”
তবে নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে ত্রুটির কথা স্বীকার করে নিয়ে প্রাক্তন পীযূষবাবু বলেন, “ইচ্ছে থাকলেও শুধু মাত্র অর্থের অভাবে সব কাজ ঠিক মতো করা যায়নি। আর সেই কারণেই দল বদল করেছি। যাতে সরকারি সাহায্যে খামতিগুলো মেটানো যায়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.