একটা বই, একটা সিনেমা। দু’টোরই কেন্দ্রবিন্দু তিনি। তাঁর প্রেম থেকে মৃত্যুরহস্য। যথারীতি বিস্ফোরক মালমশলায় ঠাসা। বিষয়বস্তু তিনি হলে, যেমনটা হওয়াটা বহু দিন ধরেই কার্যত দস্তুর।
ষোলো বছর কেটে গেল। আগামী কাল, ৩১ অগস্ট যুবরানি ডায়ানার মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৭-এ প্যারিসের সুড়ঙ্গে ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনা তাঁর জীবনে ইতি টেনে দেওয়ার পর এই দেড় দশকে টেমস দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। বহু দিন পর বাকিংহাম আবার সরগরম, রাজকুমার জর্জকে নিয়ে! কিন্তু সতেরোতম মৃত্যুদিনের আগে আলো কেড়ে নিলেন জর্জের ঠাকুমা। যেমনটা দস্তুর ছিল!
বইটা বেরিয়ে গিয়েছে বৃহস্পতিবার ‘দ্য প্রিন্সেস ডায়ানা কনস্পিরেসি’। লেখক অ্যালেন পাওয়ার তাতে সরাসরি দাবি করেছেন, রাজপরিবারের নির্দেশেই ডায়ানাকে খুন করেছিল ব্রিটিশ সেনার বিশেষ বাহিনী এবং এ ব্যাপারে তাঁর কাছে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে। অ্যালেনের বক্তব্য, সে দিন প্যারিসে ডায়ানাদের গাড়িকে ধাওয়া করা পাপারাৎজিদের দলে ছিলেন ব্রিটিশ গুপ্তচর সংস্থা এমআই-৬-এর এক ছদ্মবেশী অফিসার। তিনিই বৈদ্যুতিক বন্দুক দিয়ে ডায়ানার মার্সিডিজের চালককে শক দেন। যার ফলে ওই দুর্ঘটনা। কিন্তু কেন? লেখকের দাবি, ডায়ানা যাতে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুলতে না পারেন, সেই কারণেই তাঁকে খুন করানো হয়েছিল। |
ছবিতে নাওমি ওয়াটস, নবীন অ্যান্ড্রুজ |
ঠিক একই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আর এক জন বলছেন, “(ছবিটার) প্রতিটা দৃশ্যে আমার মনে হবে, এটা ভুল, এটা মিথ্যে, এটা ঠিক নয়।” পাক শল্যচিকিৎসক হাসনাত খান। যাঁর সঙ্গে ডায়ানার বছর দুয়েকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের গল্প ঘিরেই তৈরি হয়েছে ‘ডায়ানা’ ছবিটা। যুবরানিকে নিয়ে অগুনতি বই বেরোলেও সরাসরি তাঁর জীবন অবলম্বনে পূর্ণদৈর্ঘ্যের সিনেমা সম্ভবত এই প্রথম। নামভূমিকায় নাওমি ওয়াটস। সেপ্টেম্বরে ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা। আর সেই ছবি নিয়েই চূড়ান্ত বিরক্ত ৫৪ বছরের হাসনাত। তিনি বলছেন, তাঁর আর ডায়ানার সম্পর্ক নিয়ে যা গুজব ছড়িয়েছিল, শুধু তার ওপর ভিত্তি করেই ছবিটা তৈরি হয়েছে। যে কারণে ছবিটা দেখতে গেলে প্রতিটা দৃশ্যই তাঁর মনে হবে মিথ্যে। তাই হাসনাত ঠিক করেছেন, ‘ডায়ানা’কে দেখবেন না।
২০০১ সালে কেট স্নেলের লেখা একটি বই, ‘ডায়ানা: হার লাস্ট লাভ’-এর কাহিনি অবলম্বনেই এই ছবি। হাসনাত জানিয়েছেন, নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে কেট স্নেল তাঁর সঙ্গে দেখা করে বইটি লেখার কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার অনুমতিও চেয়েছিলেন। কিন্তু হাসনাতের দাবি, তিনি লেখিকাকে বলে দিয়েছিলেন, “আমি কারও ঠিকানা বা ফোন নম্বর দেব না। আপনি নিজে যেতে চাইলে আমার বাধা দেওয়ার কিছু নেই।”
তা হলে ঠিক কী রকম ছিল তাঁর আর ডায়ানার সম্পর্কটা? হাসনাতের বক্তব্য, “আমি ডাক্তার, ডায়ানা যুবরানি এ রকম ছোট-বড় ভেদ ছিল না আমাদের মধ্যে। আমরা বন্ধু ছিলাম। দু’টো মানুষের যেমন বন্ধুত্ব থাকে, তেমন।”
ডাক্তার জানিয়েছেন, ছবিটি মুক্তি পাওয়ার সময় একটি দাতব্য হাসপাতালের অর্থ সংগ্রহের কাজে পঞ্জাবে যাবেন তিনি। ওই হাসপাতালটি তাঁর ও ডায়ানার স্বপ্ন ছিল। |