স্ত্রীকে গুলি করে খুনের অভিযোগে স্বামীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগর রেল স্টেশনের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম আলো বিশ্বাস (২৭)। ধৃতের নাম বাসুদেব বিশ্বাস। বাড়ি স্থানীয় নওদা এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে তাঁর সঙ্গে ঝামেলা চলছিল আলোদেবীর। পুলিশের দাবি, তার জেরেই নিজের পথের ‘কাঁটা’ সরিয়ে দিতে স্ত্রীকে খুন করেছেন বাসুদেব। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে আলোদেবীকে বিয়ে করে আনেন বাসুদেব। ওই দম্পতির বছর পাঁচেকের একটি ছেলেও রয়েছে। ঠাকুরনগরের ফুলের বাজার থেকে রোজ ফুল কিনে দুর্গানগর স্টেশনে বিক্রি করতে যেতেন আলোদেবী। ফিরতেন অনেক রাতে। স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কারও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে ভেবে তাঁকে সন্দেহ করতেন বাসুদেব। সম্প্রতি এক মহিলার সঙ্গে পরিচয় হয় বাসুদেবের। ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। যা মেনে নিতে পারেননি আলোদেবী। রোজকার মতো বুধবারেও দুর্গানগরে ফুল বেচতে গিয়েছিলেন আলোদেবী।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দিন রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ আলোদেবী ঠাকুরনগর স্টেশনে নামে একটি ভ্যানে করে বাড়ি ফিরছিলেন। মাঝরাতে হঠাৎই গুলির শব্দ শুনে লোকজন ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন। দেখা যায় রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছেন আলোদেবী। আর স্বামী বাসুদেব চিৎকার করছেন এই বলে যে এক দল দুষ্কৃতী এসে তাঁর স্ত্রীর মাথায় গুলি করে পালিয়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় গাইঘাটা থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসুদেবের কাছে সমস্ত ঘটনা জানতে চাইলে তিনি তা ঠিকমতো বলতে পারেননি। এমনকী পালানোর চেষ্টাও করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ তাঁকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে এক প্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদের পরে বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
আলোদেবীর সঙ্গেই রোজ দুর্গানগরে ফুল বিক্রি করতে যান আর এক মহিলা। তবে বুধবার তিনি যাননি। পুলিশকে তিনি বলেছেন, “বুধবার গভীর রাতে বাসুদেব আমাকে ফোন করে জানায় যে আলোকে দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করেছে। তবে সে কথা আমার বিশ্বাস হয়নি, কারণ ওর কোনও শত্রু ছিল না।” দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। ওই ভ্যানচালককেও খোঁজা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। |