|
|
|
|
বাংলার বিধানসভা নয় এটা, ভর্ৎসনা কল্যাণকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
দিন কয়েক আগে লোকসভায় দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ যশোবন্ত সিংহের দিকে তেড়ে গিয়ে তুমুল নিন্দার মুখে পড়েন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। চাপে পড়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন তিনি। আজও তাঁর আচরণের জন্য লোকসভায় ভর্ৎসিত হলেন কল্যাণবাবু। জমি বিল নিয়ে বিতর্কের সময়ে সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়ার প্রতি কল্যাণবাবুর তির্যক মন্তব্য এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, সেই সময়ে সভা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ফ্রান্সিস্কো সারদিনা বলেন, “শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, এটা পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নয়। নিজেদের বিবাদের জায়গা নয়। এটি অত্যন্ত কুরুচিকর।” সময় তখন বেলা চারটে। স্পিকার মীরা কুমার সে সময়ে আসনে না থাকায় সভা পরিচালনা করছিলেন গোয়ার সাংসদ সারদিনা। বক্তা ছিলেন বাসুদেববাবু। তিনি বিল নিয়ে বলতে ওঠার পর থেকেই তৃণমূল বেঞ্চে চেঁচাতে শুরু করেন কল্যাণবাবু। পরপর এক তির্যক মন্তব্য করতে থাকেন তিনি। একটা সময়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ, আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ, সপা ও বসপা সাংসদরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসেন। কিন্তু কল্যাণবাবুর বাসুদেববাবুকে ব্যক্তিগত আক্রমণ এমন পর্যায়ে চলে যায়, হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন সারদিনা। তার পরেও কল্যাণবাবু, কাকলি ঘোষদস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, গোবিন্দ নস্করেরা দফায় দফায় বাসুদেববাবুকে বাধা দিয়েছেন। আজকের বিবাদের সূত্রপাত অবশ্য সিপিএম বেঞ্চ থেকেই। তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জমি বিল নিয়ে তাঁর বক্তৃতার শুরুতে বলেছিলেন, “ব্রিটিশদের তৈরি জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত রাক্ষুসে আইনকে হাতিয়ার করেই বাম সরকার নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরে গরিব কৃষকদের জমি অধিগ্রহণ করতে যায়। পরিণামে গুলি চলে। সে সময়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যে ভাবে কৃষকেরা লড়েছেন তা আজ ইতিহাস। সেই আন্দোলনের জেরেই আজ জমি অধিগ্রহণ বিলটি পরিবর্তন করা হচ্ছে।” তাঁর বক্তৃতার মাঝপথেই সিপিএম বেঞ্চ থেকে প্রতিবাদে মুখর হন রামচন্দ্র ডোম, সইদুল হকেরা। গলা চড়তে থাকে তৃণমূল সাংসদদেরও। পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএমের বিপর্যয়ের জের টেনে শ্লেষাত্মক মন্তব্য করতে থাকেন কল্যাণ-কাকলিরা। অচল হয়ে যায় সংসদ। ফের সুদীপবাবু বাম সাংসদদের উদ্দেশে বলেন, “ঈশ্বর যেন ওঁদের ক্ষমা করেন। এমনিতেই ওঁরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর রাজ্য থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছেন। আমার সন্দেহ রয়েছে আর কোনও দিন এঁরা লোকসভায় আসতে পারবেন কিনা!” বাসুদেববাবু নিজের বক্তৃতায় এরই পাল্টা বলেছিলেন যে, এখন লোকসভায় তৃণমূলের ১৯ জন সাংসদ থাকলেও ২০০৪-এ সংখ্যাটা ছিল ১। কাজেই রাজনীতিতে এমন দিন ফিরে আসতেই পারে। এর পরেই আবার কল্যাণের নেতৃত্বে শুরু হয় হইচই। যার জেরে সারদিনার ওই সতর্কবাণী। |
|
|
|
|
|