ক্ষুদ্রশিল্পে লক্ষ্য এক নম্বর আসন,
বস্ত্রেও আগুয়ান হতে বাড়তি মদত
ক্ষুদ্রশিল্পের সঙ্গে সঙ্গে বস্ত্রশিল্পেও সামনের সারিতে আসতে চায় রাজ্য। সেই জন্যই এই দু’টি ক্ষেত্রকে তারা অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের নতুন শিল্প ও বস্ত্র নীতি ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এ কথা জানান। এ দিন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সব নীতি ছাড়পত্র পেয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, “১০ বছরের মধ্যে ক্ষুদ্রশিল্পে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান করে দেশের মধ্যে এই রাজ্যকে এক নম্বরে নিয়ে যাওয়া হবে। বস্ত্রশিল্পেও ওই একই সময়ের মধ্যে এক কোটি কর্মসংস্থান করা আমাদের লক্ষ্য।” বস্ত্রশিল্পের ক্ষেত্রে মহিলা, তফসিলি জাতি ও উপজাতির লোকেরা বিশেষ কোনও কাজের জন্য ‘ক্লাস্টার’ বা গুচ্ছ তৈরি করলে অতিরিক্ত সহায়তা পাবেন বলে জানান তিনি। মহাকরণের খবর, বাম আমলে একটি বস্ত্রনীতি থাকলেও এই শিল্পের জন্য কোনও ভর্তুকি ছিল না। নতুন সরকার তারও ব্যবস্থা করবে।
নতুন নীতিতে রাজ্যে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত প্রকল্পকে ক্ষুদ্রশিল্পের মর্যাদা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আগে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত প্রকল্প ক্ষুদ্রশিল্প বলে ধরা হত। ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর ফলে আরও অনেক বেশি শিল্প নয়া ক্ষুদ্রশিল্প নীতির সুবিধা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। গোটা দেশের ক্ষুদ্রশিল্পের বাজারে শতকরা ২৫ ভাগ পশ্চিমবঙ্গের নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যও ঘোষণা করেন মমতা। তিনি বলেন, “প্রতি জেলায় ক্ষুদ্রশিল্পের চারটি করে ক্লাস্টার তৈরি করা হবে। উৎসাহ দেওয়া হবে স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও সমবায়গুলিকে।” অনুসারী শিল্প ও ক্ষুদ্রশিল্পের কারবারিদের দক্ষতা বৃদ্ধির উপরেও জোর দেওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন নীতিতে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বস্ত্রশিল্পে স্ট্যাম্প ডিউটি, যুক্তমূল্য কর (ভ্যাট), বিদ্যুৎ মাসুল প্রভৃতি ক্ষেত্রে মূলধনী বিনিয়োগের বিচারে আনুপাতিক হারে ছাড়ও মিলবে। বস্ত্রশিল্পে পশ্চিমবঙ্গ যে গুজরাত ও মহারাষ্ট্রের মৌরসি পাট্টায় ভাগ বসাতে বদ্ধপরিকর, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মহারাষ্ট্র-গুজরাত বস্ত্রশিল্পকে যে-গুরুত্ব দিয়েছে, আমাদের রাজ্যে আগে তা দেওয়া হয়নি।” জাতীয় স্তরে বস্ত্রশিল্পের ব্যবসায় পশ্চিমবঙ্গের ভাগ ছিল ৫.২%। তা বাড়িয়ে ১০% করার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার পরিচালিত ছ’টি রুগ্ণ সুতোকলের পুনরুজ্জীবন, পুনর্গঠন ও আধুনিকীকরণের জন্য সব ক’টিকে এক ছাতার তলায় এনে তৈরি হচ্ছে রাজ্য স্পিনফেড ফেডারেশন। ওই ছ’টি সুতোকল হল কল্যাণী, কংসাবতী, তাম্রলিপ্ত, ময়ূরাক্ষী, শ্রীরামপুর ও পশ্চিম দিনাজপুর। তাদের নিয়ে সমবায় আইন অনুসারে তৈরি হবে ওই ফেডারেশন। সুতোকল পুনরুজ্জীবনে প্রায় ২০০ কোটি টাকা খরচ হবে। সরকারের লক্ষ্য মাছের তেলে মাছ ভাজা। তারা মনে করছে, সুতোকলের উদ্বৃত্ত জমি বিক্রি করে রাজ্যের আয় হবে ২৩০ কোটি টাকা। সেটাই খরচ হবে পুনরুজ্জীবনে। এখন রুগ্ণ সংস্থাগুলির কর্মীদের বেতন দিতে ৪০ কোটি টাকা খরচ হয়।
রেশম শিল্পের মহাসঙ্ঘকে উন্নত করতে রেশম উন্নয়ন নিগম গড়া হবে বলে জানান মুুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, বেলুড়ে ১০০ একর জমিতে মেগা পাওয়ারলুম প্রকল্প হবে। নদিয়ায় হবে হস্তচালিত তাঁতের একটি উন্নততর প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি জেলায় ১০টি হ্যান্ডলুম পার্ক ও হস্তশিল্পের ১০টি ক্লাস্টারও গড়া হবে। কোচবিহার, পুরুলিয়া, দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো পিছিয়ে থাকা জেলায় ক্ষুদ্রশিল্প বা বস্ত্রশিল্পের প্রসারে বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষুদ্রশিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সব্যসাচী বাগচী জানান, রাজ্য সরকার ২০১৫ সালের মধ্যে ১৬২৮টি ক্ষুদ্রশিল্প ক্ষেত্রের কাজ শেষ করার লক্ষ্য স্থির করেছে। সরকারি ওয়েবসাইটে মুর্শিদাবাদের রেজিনগর (১৮০ একর) এবং জলপাইগুড়ির ফালাকাটা (১৫০ একর)-সহ ৬২৪টি শিল্পতালুকের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ক্ষুদ্রশিল্পের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.