অঙ্ক কী কঠিন! হয় তাকে বেজায় ভালবাসা যায়, নয়তো একটু এ দিক-ও দিক হলেই অঙ্ক বইটা রাতের বেলার দুঃস্বপ্নে দাঁত বার করে কামড়াতে আসে। কিন্তু যদি সেই ‘বে-আক্কেলে’ বিষয় শেখার জন্য পৌঁছনো যায় কোনও এক জাদু-রাজ্যে? যেখানে ত্রিকোণমিতির শক্ত শক্ত উপপাদ্য প্রমাণ করার জন্য হাতে পাওয়া যায় লাল-নীল ব্লক অথবা শুধু চৌকো চৌকো কয়েকটা ব্লক সাজালেই পিথাগোরাস এক নিমেষে চলে আসে নাগালের মধ্যে!
গত এক সপ্তাহ ধরে ঠিক এমনটাই ঘটছে পার্ক সার্কাসের ডন বসকো স্কুলে। সেখানে মডার্ন হাই, হেরিটেজ, মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি বা কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের মতো শহরের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারাও সোৎসাহে জড়ো হচ্ছে অঙ্কের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাবে বলে। সৌজন্যে কলকাতার ম্যাক্স মুলার ভবন এবং জার্মানির গিজ্ন বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত অঙ্কের প্রদর্শনী ‘ম্যাথমেটিক্স ইউ ক্যান টাচ’। এ এক এমন জগৎ, যেখানে অঙ্ককে ছোঁয়া যায়। গিজ্ন বিশ্ববিদ্যালয় গত এক দশক ধরেই এ রকম ভ্রাম্যমাণ অঙ্ক-প্রদর্শনীর আয়োজন করছে পৃথিবী জুড়ে। |
ভয় কাটিয়ে: অঙ্ককে হাত দিয়ে ‘ছুঁয়ে দেখতে’ ভিড় জমাল পড়ুয়ারা।
|
এ দেশে দিল্লি, মুম্বই, পুণে ঘুরে এ বার তা এসেছে কলকাতায়। পরের গন্তব্য চেন্নাই, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান।
ম্যাক্স মুলার ভবনের তরফে মধুরিমা মৈত্র জানান, গিজ্ন-এ আজব এক মিউজিয়াম আছে, নাম ‘ম্যাথমেটিকাম’। শুধু অঙ্কের জন্য এমন মিউজিয়াম বিশ্বে প্রথম। সেই ‘ম্যাথমেটিকাম’-এ সাজানো থাকে বেশ কিছু প্রমাণিত, পরীক্ষালব্ধ গবেষণা। যেগুলো হাতেনাতে আরও এক বার যাচাই করে নিতে পারেন দর্শকেরা। এমনই কিছু বাছাই করা গবেষণা নিয়ে কলকাতায় এসেছে ‘ম্যাথমেটিক্স ইউ ক্যান টাচ’। তার মধ্যে আছে ত্বরণ, আলোর প্রতিফলন বা সম্ভাব্যতার তত্ত্বের পরীক্ষা।
ছাত্র-ছাত্রীদের কিছু বুঝতে অসুবিধে হলে সাহায্য করছেন প্রশিক্ষকেরা। শুধু উঁচু ক্লাসের ছেলেমেয়েরাই নয়, ছোট-ছোট পড়ুয়ারাও সুযোগ পেলেই ঢুকে পড়ছে অঙ্কের এই গবেষণাগারে। তারাও দিব্যি উপভোগ করছে সব কিছু। কাজেই ভবিষ্যতে এই ধরনের শিক্ষাপদ্ধতি বিভিন্ন স্কুলেও চালু করার কথা হয়তো ভাববেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। আর এটাই ‘ম্যাথমেটিকাম’-এর লক্ষ্য।
|
বালুরঘাটে বিজ্ঞান মেলা। বৃহস্পতিবার ছবিটি তুলেছেন অমিত মোহান্ত। |