ভোট নিয়ে নির্লিপ্ত ফকিরডাঙা
সামনেই পুরভোট। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দেওয়াল লিখন ও পতাকায় সেজে উঠছে বিভিন্ন ওয়ার্ডের পাড়াগুলি। কিন্তু এক নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরডাঙাল আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দারা পুরভোট নিয়ে খানিকটা নির্লিপ্ত। অনুন্নয়নই এর প্রধান কারণ বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের দাবি, ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে পুরসভা এলাকায় বসবাস করলেও (বর্তমানে ৪০ ঘর অদিবাসী ও মুসলিম-সহ ৫৫টি পরিবার) উন্নয়ন থমকে খাস জমির উপর দাঁড়িয়ে থাকা টিন বা খড়ের ছাউনি মাটির বাড়ি, মোরাম রাস্তা পর্যন্তই। বিপিএল তালিকায় নাম নেই অধিকাংশ পরিবারের। নিকাশি নালার চিহ্ন মাত্র নেই।
সানাই সরেন, মঙ্গল মুর্মু, নুনি মুর্মু বা সুখদি সরেনরা বলেন, “বহু বছর ধরে রাস্তার কথা কাউন্সিলরকে বললেও কাজ হয়নি। প্রায় চার কিমি দূরে পুরসভায় যাওয়ার জন্যও রাস্তা নেই।” তাঁদের ক্ষোভ, “ছাউনির জন্য বেশ কয়েকটি টিন দেওয়া হয়েছিল। শুনে আসছি আমরা যেখানে বাস করছি, সেই জমি আমাদেরকে পাট্টা দেওয়া হবে। কিন্তু কোথায়!” গত পাঁচ বছর কংগ্রেস পুরবোর্ডের আমলে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন ফকির বাউড়ি (বর্তমানে তৃণমূলে)। ফকিরবাবু রাস্তা বা নিকাশি নালা না থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে তিনি বলেন, “এর আগে তো পানীয় জলের নলকূপও ছিল না। সেটা হয়েছে। ‘অ্যানিম্যাল শেড’ তৈরি হয়েছে। গবাদি পশু ও এলাকার মানুষের ব্যবহারের জন্য ডোবা কাটানো হয়েছে।” তাঁর যুক্তি, রাস্তা বা নিকাশি নালা করার আগে মাথা গোঁজার জন্য টিনের ব্যবস্থা আগে করা দরকার।
রাস্তা না গবাদি পশু রাখার জায়গা বোঝাই যাচ্ছে না। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত
অবশ্য সিপিএমের জোনাল সদস্য তথা ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর শীতল বাউড়ির দাবি, “কয়েকটা টিন দেওয়া ছাড়া কার্যত কিছুই করেনি পুরসভা। পাট্টা দেওয়ার আইনগত জটিলতা কেটে গিয়েছে প্রায় সাড়ে চার বছর আগেই। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী পুরসভার অধীনে খাস জমিতে বসবাসকারি গরিব পরিবারগুলিকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা ১ টাকার বিনিময়ে ৯৯ বছরের লিজ দেওয়ার কথা। সেই লিজ দেওয়ার ব্যাপারে ভূমি দফতর থেকে সমীক্ষা করা হয়েছিল বছর আড়াই আগে। শুধু তাই নয়, এই কাজ করতে একটি কমিটিও তৈরি হয়। তাতে পুরপ্রধান, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর এবং ভূমি আধিকারিক থাকেন। কিন্তু সেই কাজ সম্পন্ন করতে কেউই এগিয়ে আসেনি।”
পাট্টা দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ মেনে নিলেও ফকির বাউড়ি এবং বিদায়ী পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডেরা অবশ্য পুরো দায় চাপিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের ওপর। তাঁদের দাবি, “আমাদের চেষ্টার ত্রুটি নেই। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের গাফিলতিতে এখনও তা করা যায়নি। তবে ওই ওয়ার্ডেরই অন্য একটি পাড়ার ৩৫টি পরিবারের জন্য রাজস্ব কাটা হয়েছে। শীঘ্রই ওই পরিবারগুলি লিজ পাবেন।” অন্য দিকে, দুবরাজপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক বিশ্বজিৎ ঘোষ অবশ্য আভিযোগ মানেননি। তিনি বলেন, “আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করেছি। ৩৫টি পরিবারের তালিকা তৈরি ও রাজস্ব কেটে মাস আড়াই আগেই জেলায় পাঠিয়ে কাউন্সিলরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। খুব সম্ভবত পঞ্চায়েত ভোটের জন্য দেরি হচ্ছে। তবে ফকিরডাঙাল পাড়ার বিষয়টি কী আবস্থায় রয়েছে দেখে বলতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.