সিপিএমের এক প্রাক্তন কাউন্সিলরের বাড়ির দেওয়ালে লেখা নিয়ে সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে গোলমাল বাধল বর্ধমানের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। বৃহস্পতিবার ওই ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী রামেন্দ্রসুন্দর মণ্ডল ও দলের প্রাক্তন কাউন্সিলর অধিক্রম সান্যালকে তৃণমূলের লোকজন মারধর করে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, অধিক্রমবাবুরাই তাদের কর্মীদের উপরে চড়াও হন। এক মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও বর্ধমান থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছে তৃণমূল।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ দিন বিকেলে সিপিএম ওই ওয়ার্ডে একটি মিছিল করে। তাতে যোগ দেন দলের জেলা সম্পাদক অমল হালদার, বর্ধমান শহর জোনাল সম্পাদক তাপস সরকার, প্রাক্তন পুরপ্রধান আইনূল হক প্রমুখ। ওই ওয়ার্ডেই তখন তৃণমূলের একটি সভার প্রস্তুতি চলছিল। সিপিএমের মিছিল সেখান দিয়ে পেরোনোর সময়ে দু’পক্ষই স্লোগান দিতে থাকায় নতুন করে অশান্তির আবহ তৈরি হয়। তবে পুলিশ থাকায় পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে যায়নি। সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ওয়ার্ডে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। |
সিপিএমের অভিযোগ, অধিক্রমবাবুর বাড়ির দেওয়ালে রামেন্দ্রসুন্দরবাবুর পক্ষে দেওয়াল লেখা হয়েছিল। তৃণমূলের লোকজন তা মুছে দিয়েছে। রামেন্দ্রসুন্দরবাবু পুলিশে অভিযোগ করেন, এ দিন তিনি স্কুটারে চড়ে যাচ্ছিলেন। পিছনে বসেছিলেন প্রাক্তন কাউন্সিলর অধিক্রমবাবু। শনি ঠাকুরের মন্দিরের কাছে তৃণমূলের প্রায় জনা কুড়ি সমথর্ক তাঁদের গালিগালাজ শুরু করে। ভোটের প্রচারে বেরোলে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়। প্রতিবাদ জানালে তাঁকে মারধর করা হয়। অধিক্রমবাবুকেও ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, অধিক্রমবাবুর বাড়ির দেওয়াল চুনকাম করা হয়েছিল ঠিকই, তবে কোনও লিখন মুছে তা করা হয়নি। পরে অধিক্রমবাবু নিষেধ করায় সেখানে লেখা বন্ধ রাখা হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ বহিরাগত কিছু দুষ্কৃতীকে নিয়ে রামেন্দ্রসুন্দরবাবু ও অধিক্রমবাবু তৃণমূলের কয়েক জন সমর্থককে মারধর করেন। দলের এক মহিলা সমর্থকের শ্লীলতাহানিও করা হয় বলে অভিযোগ।
সিপিএমের প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আইনূল হকের অভিযোগ, “শহরের ওয়ার্ডগুলিতে প্রায় প্রতি দিনই আমাদের প্রার্থীরা নানা ভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন। তৃণমূল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বানচাল করার চেষ্টা করছে।” রামেন্দ্রসুন্দরবাবু তাঁদের দুই কর্মীকে থাপ্পড় মেরেছেন অভিযোগ করে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী পরেশ সরকারের দাবি, “এই ওয়ার্ডে সিপিএম এক বহিরাগতকে প্রার্থী করায় মানুষ ক্ষুব্ধ। তাই ওই প্রার্থীকে দেখে তাঁরাই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এর সঙ্গে আমাদের যোগ নেই।”
বর্ধমানের আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সিপিএম এবং তৃণমূল পরস্পরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছে। এক মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগও পেয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।” |