ছাত্র রাজনীতি থেকে হাতেখড়ি। স্থানীয় মানুষের হয়ে আন্দোলন তাঁকে গ্রাম পঞ্চায়েত নেত্রী করে তুলেছিল। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব থেকে পাঠানো ডাটা দেখে তাই জেলা পরিষদ আসনে জয়ী তিন আদিবাসী মহিলার মধ্যে থেকে ‘কাজের লোক’ ললিতা টিগ্গাকে বেছে নিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গঙ্গারামপুরের কালদিঘির আদিবাসী মহিলা ললিতা টিগ্গা এ বার তৃণমূল পরিচালিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি। মাধ্যমিক পাশ ললিতা দেবীর বয়স ৪২ বছর। তিন ছেলেমেয়ে ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী বাবলু টিগ্গাকে নিয়ে সংসার।
বাম দখলে থাকা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের শেষ পাঁচ বছরের সিপিএমের সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মুর পরে তিনি দ্বিতীয় আদিবাসী মহিলা হিসাবে সভাধিপতি হলেন। বুধবার কলকাতা থেকে ফিরলে দলীয় কর্মীরা তাঁকে স্বাগত জানান। ললিতা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমাকে যে গুরু দায়িত্ব দিলেন, তার পালন করব। সাধারণ মানুষ, জেলার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করব।” তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র বলেন, “উনি দলের একনিষ্ঠ কর্মী। কাজের মেয়ে যোগ্য দায়িত্ব পেলেন। আমরা খুশি।”
ললিতা টিগ্গা। |
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাপরিষদের ১৮ আসনের ১টি বাদে ১৭টি আসনে ভোট হয়। তার মধ্যে এককভাবে ‘টিম তৃণমূল’ ১৩টি আসনে জয়লাভ করে জেলাপরিষদ দখল করেছে। পাশাপাশি বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ হিলি থেকে নির্বাচিত তৃণমূলের জেলাপরিষদ প্রার্থী কল্যাণ কুণ্ডু সহকারী সভাধিপতি নির্বাচিত হয়েছেন। জেলার হিলি সীমান্ত এলাকা থেকে এই প্রথম সহকারী সভাধিপতি পদে নির্বাচিত হওয়ায় বুধবার একই ভাবে খুশিতে ভাসেন ওই অঞ্চলের মানুষ। এ দিন ১১টায় বালুরঘাটে স্টেশনে দলীয় কর্মীরা কল্যাণবাবুকে ফুলের তোড়ায় সংবর্ধনা দেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের তৃণমূলের দলনেতা নির্বাচিত হয়েছেন হরিরামপুর থেকে নির্বাচিত শুভাশিস পাল। দলীয় সূত্রের খবর, তাকে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। দলনেতা হয়ে সোনা পাল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী গুরুদায়িত্ব দিয়েছেন। বিপ্লবদা’র পরামর্শ নিয়ে কাজ করব।”
টানা পঁয়ত্রিশ বছর ধরে বামেদের দখল থাকা জেলা পরিষদ এ বার একক ভাবে তৃণমূল দখল করেছে। গঙ্গারামপুর ৪ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে কঠিন লড়াই হয়। সিপিএম প্রার্থীকে ২২১৬ ভোটে হারিয়ে জয়ী হন একদা দমদমা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান ললিতা টিগ্গা। দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের ঘনিষ্ঠ অনুগামী ললিতা দেবীর রাজনীতি শুরু কংগ্রেস আমলে ছাত্রী অবস্থায়। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই তিনি সেই দলে। এ দিন বিদায়ী সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মু বলেছেন, “বামফ্রন্ট আমলেই পিছিয়ে থাকা আদিবাসী মহিলাদের উচ্চ পদে বসানোর নিয়ম চালু করা হয়েছিল। আশা করি ললিতা ভাল কাজ করবেন। শুভেচ্ছা রইল।” |