কার্যত গত ৯ মাস ধরে বন্ধ পুরসভার মাসিক সভা। তিন মাস থেকে বন্ধ রয়েছে তৃণমূল পরিচালিত তিন নম্বর বরোর মাসিক সভা। কোনও কারণ ছাড়াই কেন বরো মিটিং হচ্ছে না জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। মাসিক বৈঠক না হলেও ৪ টি বরোতে নিয়মিত বৈঠক হয়েছে। বৈঠক হচ্ছে না তিন নম্বর বরোর। জুন মাস থেকে কোনও মাসিক বৈঠক ডাকেননি বরো চেয়ারম্যান নিখিল সাহানি। তিনি বলেন, “পুরসভায় কোনও কাজ নেই। বৈঠক ডেকে কী আলোচনা করব? এতে খরচ বাড়বে। সেপ্টেম্বরের শুরুতে বৈঠক ডাকা হবে।” মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “তিন মাস ধরে কেন বৈঠক করেননি বরো চেয়ারম্যান তা জানতে চাওয়া হবে।”
পুরসভায় যে সমস্ত কাজ নিয়ে মাসিক অধিবেশনে আলোচনা হয়, সে সমস্ত বিষয় নিয়ে বরো গুলিতেও বৈঠক করার নিয়ম। প্রতিটি বরোর বৈঠকে উপস্থিত থাকেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। কিন্তু কোনও কারণ না দেখিয়েই ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান মাসিক বৈঠক ডাকছেন না বলে অভিযোগ। মাসিক বৈঠক বন্ধ থাকায় বরোতে বিল্ডিং প্ল্যান পাস আটকে রয়েছে। ফলে তা থেকে পুরসভার যে আয় হয় তা আসেনি। বরোর মাধ্যমে সম্পত্তিকর, জলের পরিষেবা বাবদ টাকাও নেওয়া হয়। পুরসভার আয় বন্ধ করতেই তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণে থাকা ওই বরোতে মাসিক বৈঠক করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ কংগ্রেস কাউন্সিলর ও মেয়র পারিষদদের।
তিন নম্বর বরোয় রয়েছে মোট ১০টি ওয়ার্ড। কিন্তু মিটিং না হওয়াতে কাউন্সিলরা সমস্যার কথা জানাতে পারছেন না বলে অভিযোগ। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পম্পা দাস বলেন, “আমার ওয়ার্ডের কয়েকজনের বিল্ডিং প্ল্যান আটকে রয়েছে। মিটিং না হওয়ায় কাজ করতে পারছেন না তাঁরা।” একই কথা জানান পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক। তিনিও জানান, তাঁর ওয়ার্ডেও কয়েকজনের বিল্ডিং প্ল্যান আটকে রয়েছে। তিন মাস থেকে বরো মিটিং না হওয়ায় প্রায় ১০ টি বিল্ডিং প্ল্যান ও ১৫ থেকে ২০ টির মত সাইটপ্ল্যান আটকে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে বাম কাউন্সিলের তরফেও। বাম কাউন্সিলর মৌসুমী হাজরা বলেন, “মিটিং হলে সমস্ত কাজের কথা বলা যায়। মশার তেল থেকে ব্লিচিং পাউডারের জন্যও পুরসভায় জানাতে হচ্ছে।” পাশাপাশি শহরে ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়ার পরেও এ মাসে কোনও বৈঠক না করায় ক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের একাংশ।
প্রতি বরো থেকে মাসে বিল্ডিং প্ল্যান ও সাইট প্ল্যান মিলিয়ে আয় হয় প্রায় ৭০ হাজার কাছাকাছি। এছাড়া বাকি সব কিছু মিলিয়ে দু’ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা আয় হয়। আরেক তৃণমূল কাউন্সিলর পরিচালিত চার নম্বরতে এপ্রিল থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত মোট আয় হয়েছে ৮ লক্ষ ৯৯ হাজার ১৪৩ টাকা। প্রায় প্রতিটি বরোতেই আয়ের পরিমাণ একই। অথচ ৩ নম্বর বরোতে তিন মাস মাসিক সভা না হওয়ায় ওই আয় আসছে না পুরসভার। তবে কাজ নেই বলেই মিটিং করা হচ্ছে না। |