বিয়ের তিনদিন আগে এক যুবতীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় আরও দুই জন জড়িত রয়েছে বলে ধৃতকে জিঞ্জাসাবাদের পর জানতে পেরেছে তদন্তকারীরা অফিসারেরা। গুরুতর অসুস্থ ওই যুবতীকে প্রথমে বীরপাড়া হাসপাতালে পরে রাতে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ-সহ নানা জটিলতায় অবস্থার অবনতি হওয়ার পর তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার সকালে যুবতীর জ্ঞান ফিরলেও তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “যুবতীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সে নানা ধরণের কথা বলছে। ওই তরুণী কিছুটা সুস্থ হলে বিষয়টি আরও পরিস্কার হবে।”
গত মঙ্গলবার রাতে ডুয়ার্সের বানারহাটের কাছে মরাঘাট বাগানের প্রস্তাবিত হিন্দি কলেজের ঘন ঝোপের ভিতর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবতীকে পড়ে থাকতে দেখেন এলাকায় কয়েকজন বাসিন্দা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই জখম যুবতীকে উদ্ধার করে। মরাঘাট চা বাগানের শ্রমিকবস্তির বাসিন্দা বছর ২৬ যুবতী মঙ্গলবার বিকালে বিন্নাগুড়ি বাজারে সবজি কিনতে যান। সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি ফেরার বাসের জন্য বিন্নাগুড়ি চা বাগানের মোড়ের ধারে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। |
পুলিশ জানায়, বিন্নাগুড়ির বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর সিরাজ আনসারি সাইকেলে চাপিয়ে যুবতীকে বাগানে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। স্থানীয় ওই যুবকের কথায় রাজি হয়ে তিনি সাইকেলে চাপেন। অন্ধকার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ওই ঝোপের একটি সরু রাস্তার ভিতরে আচমকা সিরাজ সাইকেল নিয়ে ঢুকে পড়েন। সেখানে তার আরও দুই সঙ্গী ছিলেন। সেখানেই ৩ জনে ওই যুবতীকে ধর্ষণ করে বলে পুলিশের অনুমান। রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তল্লাশি করার সময় সিরাজকে দেখতে পেয়ে আটক করে। সিরাজ পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি ওই ঘটনায় জড়িত নয়। তার সাইকেলের পিছনে আসা দুই জন বাইক আরোহী ওই যুবতীকে সাইকেল থেকে নামিয়ে তাঁকে ভয়ে দেখিয়ে ধর্ষণ করে। তবে তারা কারা তা স্পষ্ট জানাতে তিনি বুঝতে পারেননি। এদিন যুবতীর বাবা এসে থানায় সিরাজের নামে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
তরুণীর বাবা জানান, কয়েক বছর ধরে মেয়ে দিল্লিতে কাজ করত। গত ১৪ আগস্ট মেয়ে বাড়ি ফেরে। দিল্লির এক যুবকের সঙ্গে তিন দিন বাদে বাগানে তার বিয়ের কথা ছিল। হবু জামাইকে বাড়িতে রেখে মেয়ে বাজার করতে যায়। কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলে ফেরেনি। পরে উদ্ধার হওয়ার ঘটনাটি জানতে পারি। আমি দোষীদের কড়া শাস্তি চাই। ঘটনাটি জুড়ে বানারহাট জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বানারহাটের এক ক্লাবের পক্ষে কালো ব্যাচ পড়ে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি তুলে থানায় এদিন বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। মরাঘাট চা বাগানের শ্রমিকরা এদিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বাগানের এনইউপিডব্লুউ নেতা ভূষণ টিরোয়া জানান, এই ঘটনা আমরা মেনে নিতে পারছি না। পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা অভিযুক্ত সকলের শাস্তি চাই। এই দাবিতে বাগানে মিছিলও করা হবে। |