এত দিন ছড়ি ঘোরানোর মাসুল দিতে হচ্ছে, মত আরএসপি’র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বছরের পর বছর যেখানে যারা আধিপত্য করেছে, এখন সেখানেই ধাক্কা খেতে হচ্ছে। সিপিআই, সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের পরে এ বার পঞ্চায়েত ভোটের পর্যালোচনা করতে গিয়ে এমনই মনে করছে আর এক বাম শরিক আরএসপি। বাম নেতা-কর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের সংযোগে টান পড়ার সুযোগ তৃণমূল নিয়েছে বলেও প্রাথমিক ভাবে তাদের অভিমত।
পঞ্চায়েতের ফলাফল পর্যালোচনার জন্য আগামী ৩ সেপ্টেম্বর আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী এবং ৪ তারিখ রাজ্য কমিটির বৈঠক বসছে। জেলা থেকে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক কিছু রিপোর্ট পেয়েছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। তার ভিত্তিতেই তাঁদের মত, শাসক দলের সন্ত্রাস ছিলই। তবু তার মধ্যেই যতটুকু জনমতের প্রতিফলন ধরা পড়েছে, তা থেকে কয়েকটি জিনিস স্পষ্ট। এবং সেখান থেকেই দেখা যাচ্ছে, ছড়ি ঘোরানোর সংস্কৃতিই এ বার বামেদের বাড়তি বিপত্তি ডেকে এনেছে। আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “গত ১৫-২০ বছর ধরে কিছু কিছু জায়গায় আমাদের কোনও না কোনও দলের আধিপত্য ছিল। মানুষ এ বার সুযোগ পেয়ে সেই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন। কোচবিহারে ফরওয়ার্ড ব্লক, দক্ষিণ দিনাজপুর বা দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আরএসপি ধাক্কা খেয়েছে।” তবে তৃণমূল আরও উৎকট ভাবে সেই আধিপত্যের রাজনীতিই জাঁকিয়ে বসাচ্ছে বলেও আরএসপি নেতৃত্বের মত। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলের প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখার রাস্তা খোঁজার চেষ্টা হবে রাজ্য কমিটিতে।
বস্তুত, ক্ষমতায় থাকাকালীন দাপট দেখানোর রাজনীতির মাসুল যে এখন দিতে হচ্ছে, এই মত উঠে এসেছে বড় শরিক সিপিএমের মধ্যেও। বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর, হুগলির একাংশে এই কারণেই তৃণমূলের বেপরোয়া আচরণ দেখেও মানুষ এ বার বামেদের সমর্থন করেননি বলে সিপিএমের রাজ্য কমিটির অন্দরে চর্চা চলছে। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, “অতীতে কিছু কিছু কাজ ভুল হয়েছিল তো বটেই। এখন সুযোগ আছে, শুধরে নিতে হবে।”
বিরোধী ভূমিকায় চলে যাওয়ার পরে মানুষের সঙ্গে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরে নেতা-কর্মীদের যোগাযোগ আরও নিবিড় হওয়ার পরিবর্তে অনেক জায়গায় শিথিল হয়ে পড়েছে বলেও আরএসপি নেতৃত্বের বিশ্লেষণ। গ্রাম পঞ্চায়েতে ৮২০, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৭৫ এবং জেলা পরিষদে ১০টি আসন জিতেছে আরএসপি। |