আইএসজিপি প্রকল্পের কাজ অবিলম্বে শুরু করতে নির্দেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে সদ্য গঠিত নয় জেলার ৭৯২টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ‘আইএসজিপি’ (গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাতিষ্ঠানিক সশক্তিকরণ প্রকল্প) প্রকল্পে অবিলম্বে কাজ শুরু করতে বলল রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। এ জন্য সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে ২০২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে।
২০১২-১৩ আর্থিক বছরের মূল্যায়নের ভিত্তিতে গত মে মাসেই এই টাকা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচন এসে যাওয়ায় তাদের সে টাকা দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়ে বলেছে, তাঁরা যেন ওই টাকা ৩১ অগস্টের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন। ‘আইএসজিপি’ প্রকল্পটি বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায় রাজ্যে চলছে ২০১০ সাল থেকে। চলবে ২০১৫ পর্যন্ত। এই প্রকল্পে নির্বাচিত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির পাঁচ বছরে গড়ে এক কোটি টাকা করে পাওয়ার কথা। এই টাকায় তারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করবে। যে ন’টি জেলায় প্রকল্পটি চলছে সেগুলি হলবাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান, কুচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়া।
প্রকল্প শুরুতে ন’টি জেলার এক হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতকে বাছাই করা হয়। তবে টাকা পাওয়ার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে বিশ্ব ব্যাঙ্কের দেওয়া কিছু বাধ্যতামূলক শর্ত পালন করতে হয়। যে সব পঞ্চায়েত সে সব শর্ত পূরণ করতে পারে তারাই কেবলমাত্র অনুদান পেয়ে থাকে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে মাথাপিছু ৯০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। সেই হিসেবে বেশি জনসংখ্যার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি পায় গড়ে ৩০ লক্ষ টাকা করে। কম জনসংখ্যার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি পায় গড়ে ১৫ লক্ষ টাকা। ২০১০-১১ অর্থবর্ষে এক কিস্তি এবং ২০১১-১২ আর্থিক বছরে দু’টি কিস্তি অনুদান দেওয়া হয়। ২০১২-১৩ আর্থিক বছরের চতুর্থ কিস্তির অনুদান পাওয়ার জন্য বাধ্যতামূলক শর্ত পালন করতে পেরেছে ৭৯২টি গ্রাম পঞ্চায়েত। তাদের এ বার টাকা দেওয়া হচ্ছে।
তবে এই টাকা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পঞ্চম কিস্তির টাকা পাওয়ার জন্য ফের বাধ্যতামূলক কিছু শর্তপূরণের পরীক্ষায় বসতে হবে। অন্যতম শর্ত হলআগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাপ্ত টাকার ৬০ শতাংশ খরচ করে ফেলতে হবে। সদ্য ক্ষমতায় আসা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির প্রধানদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, এত কম সময়ের মধ্যে পুরো প্রকল্পটি বুঝে প্রাপ্ত টাকার ৬০ শতাংশ খরচ করা কতটা বাস্তবসম্মত? একই সঙ্গে তাঁদের আশঙ্কা, এই শর্ত পূরণ করতে না পারলে পরবর্তী বরাদ্দ আটকে যাবে না তো?
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের উপ-সচিব তথা রাজ্যে ‘আইএসজিপি’ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৌম্য পুরকায়স্থ বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের জন্য দেরি হয়েছে জানিয়ে বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছে টাকা খরচের সময়সীমা এ বারের জন্য বাড়ানোর অনুরোধ করে চিঠি লিখেছিলাম। বিশ্ব ব্যাঙ্ক আমাদের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। ফলে, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির সমস্যা হবে না।” |