ছেলের পিতৃ পরিচয়ের দাবি আদায় করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মা। আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণিত হয় ওই তরুণীর প্রেমিকই তাঁর ছেলের ‘বায়োলজিক্যাল ফাদার’। কিন্তু সেই যুবক তা মানেননি। ধর্ষণের অপরাধে পুরুলিয়া পুরুলিয়া জেলা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক অবনী পাল সিংহ সম্প্রতি গণেশ বাউরি নামের ওই যুবককে ১০ বছর কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রেমিক পিতৃত্ব অস্বীকার করে জেলে যাওয়ায় ওই তরুণী তাঁর ছয় বছরের ছেলেকে কী ভাবে বড় করবেন, এখন তা নিয়ে দুর্ভাবনায় পড়েছেন।
পুরুলিয়া শহরের উপকন্ঠে কর্পূরবাগান বস্তি এলাকায় ওই তরুণীর বাস। বাবা রিকশাচালক, মা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। ভাই স্কুলে পড়ে। তরুণী জানান, এলাকার যুবক গণেশের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। ২০০৬ সালে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করে সে। তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে যুবকটি জানিয়েছিল সন্তানের জন্মের পরে সে বিয়ে করবে। কিন্তু সন্তান নিয়ে ওই যুবকের বাড়িতে কিছুদিন থাকার পরে তরুণীটিকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এরপর তিনি ওই যুবকের বিরুদ্ধে আদালতের কাছে অভিযোগ জানান। আদালত পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার সরকারি কৌঁসুলি সুবোধ চট্টোপাধ্যায় জানান, তদন্ত শেষে পুলিশ অভিযুক্ত গণেশ বাউরির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। বিচারকের নির্দেশে সন্তানের প্রকৃত পিতা কে তা নির্ধারণের জন্য ওই তরুণী, গণেশ ও শিশু সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। রিপোর্টে জানানো হয়, অভিযুক্ত গণেশই ওই শিশুর ‘বায়োলজিক্যাল ফাদার’। গণেশের দাদা কার্তিক বাউরি বলেন, “ভায়ের যা হওয়ায় হয়েছে। ওই মেয়ে ও তার বাচ্চার ব্যাপারে আমরা দায় নেব না।”
তরুণী বলছেন, “ভেবেছিলাম আদালতের কাছে ও ছেলের পিতৃত্ব স্বীকার করে নিয়ে আমারপ সঙ্গে ঘর বাঁধবে। কিন্তু এখন বুঝছি অনেক লড়াই বাকি। যে ভাবেই হোক ছেলেকে সত্যিকারের মানুষ করতে হবে।” তাঁর আইনজীবী তাপস মাহাতো বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ওই তরুণীর জন্য আদালতে লড়েছি। এ বার ওঁকে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য চেষ্টা করতে হবে।” |