যাত্রীর অভাব নয়, হাট ফেরত কিছু যাত্রীর দৌরাত্ম্যে রবিবার বিকেলে বাস বন্ধ মানবাজার রুটে। এর ফলে রবিবার বিকেল গড়ালেই সমস্যায় পড়ে যান পুরুলিয়ায় যাওয়া দক্ষিণ পুরুলিয়ার একাংশের বাসিন্দারা। বাস মালিকদের অভিযোগ, কেন্দা থানার তালতল গ্রামের কাছে হাটে যাওয়া কিছু লোক নেশা করে অতীতে বাস কর্মীদের সঙ্গে গোলমাল পাকিয়েছে। তাদের উৎপাতেই ওই সময়ে বাস চালানো বন্ধ রাখা হয়েছে।
সপ্তাহের ছ’দিন পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মানবাজার যাওয়ার বাস ছাড়ে। কিন্তু রবিবার বিকেল ৪টে ৪০-এর পরে পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে আর কোনও বাস মানবাজার রুটে যায় না। ফলে মানবাজার ও কেন্দা থানা এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বিপাকে পড়ে গিয়েছেন বোরো ও বান্দোয়ান থানা এলাকার একাংশের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দক্ষিণ পুরুলিয়ার ওই সব এলাকায় সরকারি বাস চলে না। ভরসা শুধু বেসরকারি বাস। রেলপথ আজও হল না। ছোট ভাড়া গাড়িও তেমন চলে না। ফলে রবিবার বিকেলের পরে কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন পড়লে বিপদে পড়ে যান বাসিন্দারা। সম্প্রতি এক রবিবার পুরুলিয়ায় যাওয়া মানবাজারের বাসিন্দা তপন মুখোপাধ্যায় বাস না পেয়ে বেশ সমস্যায় পড়ে যান। তাঁর অভিজ্ঞতা, দু’টি বাচ্চাকে নিয়ে সাড়ে চারটেতে পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখি বাসে তিলধারণের জায়গা নেই। শেষে আরও কয়েকজনের সঙ্গে ভাড়া গাড়িতে মোটা টাকা খরচ করে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।” একই অভিজ্ঞতার কথা শোনান মানবাজারের নৃত্যশিল্পী শিল্পী মুখোপাধ্যায়, গোপালনগর গ্রামের ওষুধ ব্যবসায়ী দেবদাস মুখোপাধ্যায়রা।
পুরুলিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, “বিকেলের দিকে মামবাজারে কয়েকটি বাস চলে না জানি। কারণ কেন্দা থানার তালতল গ্রামের কাছে রাস্তার পাশে রবিবার হাট বসে। সেখানে আসা কিছু লোক নেশা করে বাসে উঠে ভাড়া দিতে চায় না। এ নিয়ে ঝামেলাও হয়েছে। অনেকে আবার নিষেধ না মেলে বাসের ছাদে চড়ে বসেন। কয়েকবার দুর্ঘটনাও ঘটেছে।” তাঁর দাবি, অশান্তি এড়াতেই বাস মালিকরা রবিবার বিকেলে ওই রুটে বাস চালাচ্ছেন না।” তবে পুলিশের আশ্বাস, বাস মালিকরা এ ব্যাপারে কথা বললে, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তারা প্রতি রবিবার ওই রাস্তায় নজরদারি শুরু করবেন। মহকুমাশাসক (পুরুলিয়া সদর) সৌম্যজিৎ দেবনাথ বলেন, “সমস্যাটি গুরুতর। বিশদে খোঁজ নিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় দেখছি।”
তবে ওই হাটে মানুষজনদের অনেকেই বাসমালিকদের অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁদের দাবি, গোলমাল হয়ে থাকলে তা অল্প কয়েকজন করে থাকতে পারে। সবাই কেন ভুগবেন? |