তৃণমূল কর্মী খুনের মামলায় ধৃত দক্ষিণ ২৪ পরগনার সিপিএম নেতা সাত্তার মোল্লার সঙ্গে জেলে দেখা করতে গিয়ে শাসক দলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এলেন বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। বললেন, দিন বদলালে তৃণমূলের লোকজনকেও জেলে ঢুকতে হবে!
পঞ্চায়েত ভোটের আগে খুনের মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ভাঙড়ের রেজ্জাক-ঘনিষ্ঠ নেতা সাত্তার। আলিপুর জেলে বুধবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল সিপিএমের একটি প্রতিনিধিদল। রেজ্জাকের সঙ্গেই ছিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সম্পাদক তথা দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী। |
জেল-চত্বরের বাইরে বেরিয়ে নিজস্ব ঢঙে রেজ্জাক বলেন, “জেলে একটু ঘুরে গেলাম। মাঝেমাঝেই আসি। ওরা (তৃণমূল) আমাকেও জেলে ঢোকানোর হুমকি দেয় তো!” সিপিএমের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটে নির্বিঘ্নে ভাঙড় দখল করার লক্ষ্যে সাত্তারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তৃণমল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে সিপিএমও কিছু পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছে। কিন্তু সে সব নিয়ে তদন্তে কোনও অগ্রগতি হয়নি। এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সহাস্যেই রেজ্জাক এ দিন বলেছেন, “ও সব এখন কিছু হবে না। ২০১৬-র পরে তেমন পরিস্থিতি এলে সব ধরে ধরে ঢুকিয়ে দেব!” তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগে সরব সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতার এমন মন্তব্য পাল্টা প্রতিহিংসারই ইঙ্গিত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলেই। তবে বাম শিবিরেরই একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, সাত্তারের জামিনের আবেদন এখনও গ্রাহ্য হয়নি। তাই অন্য পথে শাসক দলের উপরে চাপ বাড়ানোর চেষ্টাই রেজ্জাকেরা করেছেন।
ঘটনাচক্রে, সংগঠনের খোলনলচে বদলানোর দাবি তুলে রাজ্য সম্পাদকের কাছে রেজ্জাক যে ‘নোট’ দিয়েছেন, বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠকে তা পেশ করা হবে কি না, এখনও বিবেচনায় রেখেছে আলিমুদ্দিন। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “উনি একটা চিঠি দিয়েছেন। সেটা নিয়ে আলোচনা হবে কি না, রাজ্য সম্পাদকই ঠিক করবেন।”
সাত্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে সূর্যবাবু অবশ্য কোনও বিতর্কের মধ্যে যাননি। সুশান্ত ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে আগে আলিপুর জেলে বা ধৃত ছাত্র-নেতাকে দেখতে শিলিগুড়িতে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বিরোধী দলনেতা বলেন, “জেলে দলের নেতা-কর্মীদের দেখতে আমরা গিয়েই থাকি। তাঁদের শরীর-স্বাস্থ্য, খাওয়া-দাওয়া, পারিবারিক বা সাধারণ সমস্যা থাকে। এই সব কারণেই আসা।” |