সন্ত্রস্ত গ্রামে ঘর ছাড়ার তোড়জোড়
ফের কি অনির্দেশ যাত্রা? গ্রাম ছেড়ে, ঘর ছেড়ে সীমান্ত থেকে আরও দূরে কোনও নিরাপদ অঞ্চলে সেনাদের গড়ে দেওয়া ফংবেনে তাঁবুতে মাথা গুঁজে নামমাত্র আব্রু রক্ষা যেখানে হুউউশ করে উড়ে এসে পড়বে না পাকিস্তানি রেঞ্জারদের ছোড়া গোলা। বা শেয়ালের গর্তের মতো কোনও বাঙ্কারে আবার কাটাতে হবে কটা অতিষ্ঠ মাস, বুলেটের হিসহিসে শিস যেখানে উচ্চকিত হয়ে রাতের ঘুম কেড়ে নেবে না।
সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ১০০ পেরিয়েছে নিয়ন্ত্রণরেখায়। পাক রেঞ্জারদের গোলাগুলির ‘মুখতোড়’ জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীরাও। কিন্তু ছিটকে আসা গোলাগুলিতে প্রাণ ওষ্ঠাগত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের। রাত বাড়লেও ঘুম আসে না আতঙ্কে। দিনের বেলাতেও কখনও কখনও গ্রাম ছুঁয়ে পেছনের পাহাড়ি জঙ্গলে আছড়ে পড়ছে পাক গোলা। এই অবস্থায় এখনও গ্রাম আঁকড়ে পড়ে রয়েছেন মানুষ।
সীমান্তে বিএসএফ-এর টহল। পুঞ্চে। ছবি: পিটিআই
কিন্তু তা আর কত দিন? আর বেশি দিন এ ভাবে গোলাগুলি চলতে থাকলে অনির্দেশ যাত্রা ছাড়া উপায়ই বা কী? ঠিক যেমনটা ঘটেছিল ১৯৯৩ বা ২০০০-এ। উদ্বাস্তু দিন যাপনের দুঃসহ স্মৃতি এখনও যে টাটকা।
সোমবার রাতে পুঞ্চের মেন্ধর সেক্টর এবং রাজৌরির তিরকুণ্ডি এলাকায় পাকবাহিনী গুলিবর্ষণ শুরু করে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র কর্নেল আর কে পালটা-র কথায়, “সারা রাত গুলির লড়াই চলে মঙ্গলবার সকালে তা থামে। ফের বুধবার বেলা তিনটে নাগাদ পুঞ্চে গুলি চালাতে শুরু করে পাকিস্তানিরা। ভারতীয় রক্ষীরাও তার মুখতোড় জবাব দিয়েছেন।” হতাহতের খবর না থাকলেও, টানা গুলির লড়াইয়ে সন্ত্রস্ত স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রাণ না গেলেও চাল ভেঙেছে অনেক বাড়ির।
নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন তিরকুণ্ডি এলাকার নিয়াকা, পারিয়ালি, গুন্ডি নাকা গ্রামগুলির আশপাশে ৩ দিন ধরে রোজই গোলা পড়ছে। থেকে থেকেই গোলা-গুলির শব্দে থরথর কাঁপছে বাড়িঘর। নিয়াকার নায়েব সরপঞ্চ জাকির কোহলির আতঙ্কিত গলা টেলিফোনে, “সব সময়েই তো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। দিনের বেলাতেও ঘরের বাইরে বেরোতে পারছি না গোলাগুলির ভয়ে।” গ্রামের আর এক বাসিন্দা আবদুল রশিদ বাজাদ বললেন, “রাতে অন্য গ্রামে আত্মীয়দের বাড়ি গিয়ে ঘুমোতে হচ্ছে। জানি না কবে থামবে এই লড়াই। এমন চলতে থাকলে গ্রাম ছেড়ে পরিবার নিয়ে গ্রামছাড়া হওয়া ছাড়া উপায় নেই।” বর্ষায় গ্রামের নদীগুলো ফুলে উঠেছে। কোনও সেতুও নেই। তাই চলে যেতে চাইলেও যেতে পারছেন না তাঁরা। সংঘর্ষ কবে থামবে, এ প্রশ্নের উত্তর আর কে দিতে পারে? জানা নেই, স্থানীয় মানুষ নিজের গ্রামে, নিজের বাড়িতে নিরাপদে কবে রাত কাটাতে পারবেন, না কি অন্য কোথাও যেতেই হবে পরিবার নিয়ে, ঘরদোর ছেড়ে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.