রাজ্যে আরও শিল্প-তালুক গড়তে উদ্যোগী নীতীশ সরকার। সেই লক্ষ্যে নতুন নিয়মও চালু হচ্ছে বিহারে। বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দিতেই ওই পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শিল্পের জন্য জমি জোগাড় করতে হবে শিল্পপতিদেরই। তবে, এ ক্ষেত্রে সরকারি তরফে কিছু সুযোগ-সুবিধাও তাঁদের দেওয়া হবে।
প্রশাসন জানিয়েছে, শিল্প তালুক গড়তে যৌথভাবে কয়েকজন বিনিয়োগকারীকে কমপক্ষে ২৫ একর জমি সংগ্রহ হবে। জমির মালিককে প্রাপ্য দাম মিটিয়ে দেওয়া হলেও, পরিকাঠামোগত উন্নয়নের পর জমির ১০ শতাংশও তাঁকে ফেরত দিতে হবে। নীতীশ সরকারের বক্তব্য, ওই ১০ শতাংশ জমিতে ইচ্ছামতো বিনিয়োগ করতে পারবেন জমির মালিকও। এতে জমি বিক্রি করতে এগিয়ে আসবেন আরও বেশি মানুষ। কারণ, সে ক্ষেত্রে টাকার পাশাপাশি তাঁদের বিকল্প কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হবে।
সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে বণিক-মহল। ‘বিহার ইন্ড্রাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি কেপিএস কেসরি বলেন, “এ সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। সংগৃহীত জমিতে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন খরচের ৩০ শতাংশ টাকা সরকার দিলে ভালো হয়।” ‘বিহার চেম্বার অফ কমার্স’-এর চেয়ারম্যান পি কে অগ্রবাল বলেন, “সরকারের এই সিদ্ধান্তে ছোট এবং মাঝারি শিল্পে গতি আসবে। ল্যান্ড-ব্যাঙ্ক তৈরির জন্য সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে।”
পশ্চিমবঙ্গে নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুর আন্দোলনের পর জমি অধিগ্রহণে যথেষ্টই সতর্ক বিহার সরকার। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের দিকেও নজর রয়েছে নীতীশ কুমারের। এই পরিস্থিতিতে তাঁর সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে, সরকার নিজে কোনও জমি অধিগ্রহণ করবে না। বিনিয়োগকারীদেরই তা সংগ্রহ করতে হবে। তবে, জমি সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় শিল্পপতিদের পাশে দাঁড়াতে নতুন নিয়ম চালু করছে নীতীশ সরকার। প্রশাসন জানিয়েছে, জমি ক্রয়ের জন্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন এবং স্ট্যাম্প খরচ নেওয়া হবে না।
বণিক-মহল সূত্রের খবর, রাজ্যে বর্তমান শিল্প-তালুকগুলিতে জমি অমিল। দীর্ঘদিন ধরেই নতুন শিল্প তালুক গড়তে রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল। গত বছর ‘উদ্যমী পঞ্চায়েত’ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সামনেও ওই দাবির কথা জানিয়েছিল শিল্পপতি সংগঠনগুলি। রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, বিনিয়োগকারীরা সকলেই যাতে শিল্প-তালুকে জমি পেতে পারেন সে দিকেও নজর রেখেছে সরকার। নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, ন্যূনতম ২৫ একর জমি ২০ জন শিল্পপতির মধ্যে বন্টন করতে হবে। ২-৩ জন বিনিযোগকারী যাতে পুরো জমি নিতে না-পারেন সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ১০ জন শিল্পপতিও একসঙ্গে ওই পরিমাণ জমি নিতে পারেন। বড় বিনিয়োগের জন্য একসঙ্গে বেশি জমি প্রয়োজন হলে সরকারের বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। |