টাকার টানা পতনে দিশাহারা
শিল্পমহল, শেয়ার বাজার
টাকার লাগামহীন পতনে দিশাহারা শিল্পমহল ও শেয়ার বাজার। কপালে ভাঁজ ব্যবসায়ীদেরও। তাঁদের কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সুড়ঙ্গের শেষে এখনও আলোর দেখা না-পাওয়া। বুধবার টাকার তুলনায় এক ধাক্কায় ২৫৬ পয়সা বেড়েছে ডলারের দর। দিনের শেষে মার্কিন মুদ্রাটির দাম দাঁড়িয়েছে ৬৮.৮০ টাকা। ৩৫৩ পয়সা উঠে ১০৬.৩৩ টাকায় পৌঁছেছে পাউন্ড। ৯১ টাকা ছাড়িয়েছে ইউরোও।
বিপুল পরিমাণ আমদানির কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ৩ তেল সংস্থার ডলারের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি, মাসে প্রায় ৮৫০ কোটি ডলার। তাতে রাশ টানতে তেল সংস্থার জন্য বিশেষ মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা এ দিনই চালু করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বিশেষ ব্যাঙ্ক থেকে তারা ওই হারে ডলার কিনবে, যাতে তা বাজার দরে প্রভাব ফেলতে না-পারে।
তবে এই পরিস্থিতিতে কার্যত মাথায় হাত বৈদ্যুতিন পণ্য সংস্থাগুলির। এমনিতেই ডলারের দর রকেট গতিতে বাড়ায় যন্ত্রাংশ আমদানির খরচ অনেক বেড়ে গিয়েছে ফ্রিজ, টিভি, এসি সংস্থার। কয়েক মাসে তো দূরের কথা, এক সপ্তাহে কতটা যন্ত্রাংশ আমদানি করা যাবে, তার হিসাব কষতেই নাজেহাল সংস্থাগুলি। একই দশা গাড়ি শিল্পেরও। তার উপর চাকরির বাজার খারাপ দেখে খরচে রাশ টানছেন সাধারণ মানুষ। তাই উৎসবের মরসুমে (সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর) বিক্রিবাটা কতটা হবে, তা নিয়ে চিন্তিত সংস্থাগুলি।
উপরন্তু চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ৩.৭% করেছে ফরাসি আর্থিক সংস্থা বিএনপি পরিবাস। মূল্যায়ন সংস্থা এসঅ্যান্ডপি অবশ্য জানিয়েছে, বিশ্ব মন্দার জের ভারতকে সমস্যায় ফেলেছে। কিন্তু বৃহৎ অভ্যন্তরীণ বাজারের কারণে তার হাল বাণিজ্য-নির্ভর অন্য দেশগুলির তুলনায় অনেকটাই ভাল।
কেন্দ্র অবশ্য এ দিনও দাবি করেছে, আতঙ্কের কারণ নেই। অর্থ সচিব অরবিন্দ মায়ারামের মতে, এই পতন অযৌক্তিক। ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞ বি কে দত্ত মনে করছেন, “আর্থিক ত্রাণ প্রকল্প আপাতত চালু রাখছে আমেরিকা। সুতরাং এ দেশের শেয়ার বাজার থেকে উন্নত দুনিয়ায় চলে যাওয়া বেশ কিছু ডলার ফের এখানে ফিরে আসার সম্ভাবনা। তাই ডলার ৭০ ছোঁয়ার পর টাকার দাম আর সে ভাবে পড়বে না।” কিন্তু কেন্দ্রের আশ্বাসে ভুলতে নারাজ শিল্প। যে-কারণে সরকারকে ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছে বণিকসভা সিআইআই। পরামর্শ দিয়েছে বিদেশে সরকারি বন্ড ছাড়ার। বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নিতে স্বল্পমেয়াদি মূলধনী লাভকর মকুব করতেও বলেছে তারা।
এ দিকে, এ দিন লেনদেন শুরুর পর এক সময়ে সেনসেক্স নেমে গিয়েছিল ৫১৯ পয়েন্ট। পরে এলআইসি-র মতো দেশি সংস্থার শেয়ার কেনার হাত ধরে তা ২৮ পয়েন্ট উঠে থিতু হয় ১৭,৯৯৬.১৫ অঙ্কে। ডলার-শেয়ারের এই উথালপাথালে লগ্নির নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে স্বাভাবিক ভাবেই আরও চড়েছে সোনা। দিল্লিতে ৩৪ হাজার টপকেছে প্রতি ১০ গ্রাম পাকা সোনা। পরিস্থিতি জটিল বলেই শেয়ার বাজার নিয়ে মন্তব্যে নারাজ অনেক বিশেষজ্ঞ। বিএনকে ক্যাপিটাল মার্কেটসের এমডি অজিত খন্ডেলওয়াল বলেন, “এই মুহূর্তে বাজারের হাল ফেরার আশা অর্থহীন। সূচক ১৫ হাজারে নেমে গেলেও অবাক হব না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.