|
|
|
|
|
|
|
|
• আমরা দুই ভাই ও এক বোন। ২০০০ সাল থেকেই বড় দাদা আলাদা থাকেন। অন্য দাদা বাবার সঙ্গেই থাকতেন। মা মারা যান ১৯৯০-এ। ২০১০ সালে বাবাও মারা যান। বাবা তাঁর মৃত্যুর আগে একটি উইল করে যান, যা দাদার কাছে আছে (যিনি বাবার সঙ্গে থাকতেন)।
এখনও পর্যন্ত দাদা উইলটিতে কী লেখা আছে, তা কাউকে জানাননি বা কী মর্মে উইল করা হয়েছে তা-ও জানাননি। এখন আমি বা বড় দাদা উইল সম্পর্কে কী করে জানব?
জয়তী ঘোষ
আপনি জানাননি, বাবা ও দাদা যে বাড়িটিতে থাকতেন, তার মালিক কে? মা-র নামে মালিকানা ছিল নাকি বাবার নামে। মা-র নামে মালিকানা থাকলে আমার বক্তব্য এক রকম হবে। বাবার নামে থাকলে হবে আর এক রকম।
আপনার মা গত হয়েছেন ১৯৯০ সালে। বাড়ির মালিকানা যদি মা-র নামে থাকত, তা হলে মায়ের করা কোনও উইল বা দানপত্রের অবর্তমানে সবাই, অর্থাৎ আপনি, আপনার দুই দাদা ও বাবা প্রত্যেকেই সম্পত্তির ১/৪ অংশের অধিকারী হতেন। সুতরাং আপনার বাবাও মোট সম্পত্তির ১/৪ অংশ পেতেন। এ বার তিনি যদি তাঁর মৃত্যুর আগে উইল করে রেখেও যান, সেটি তিনি করতে পারেন, তাঁর প্রাপ্ত ১/৪ অংশ সম্পর্কে। অর্থাৎ তাঁর প্রাপ্ত ওই ১/৪ অংশ তিনি যাঁকে খুশি উইল করে (এমনকী আপনার ওই দাদাকেও) দিতে পারেন। অবশ্য আপনারা প্রোবেট মামলা দায়েরের সময়ে ‘আপত্তি’ জানাতে পারেন।
এ বার ধরা যাক বাড়ি-সহ সব সম্পত্তির (স্থাবর ও অস্থাবর) মালিকানা ছিল আপনার বাবার নামেই। তা হলে বাবা মারা যাওয়ার পর ওই সম্পত্তির মালিক হলেন আপনি ও দুই দাদা, প্রত্যেকে ১/৩ অংশ করে (কারণ আপনার মা মারা গিয়েছেন আগেই)।
এ বার আপনি বলছেন, বাবা ‘সম্ভবত’ উইল করে গত হয়েছেন, সেটি রয়েছে সেই দাদার কাছে, যিনি বাবার সঙ্গেই থাকতেন। কিন্তু, উইলটি তিনি বাইরে প্রকাশ করছেন না।
দেখুন, আপনার ওই দাদা বাবার সঙ্গেই থাকতেন। হয়তো, বাবাকে ‘দেখাশোনা’-ও করতেন। শেষ সময়ে তাঁকে দেখতেন, অসুস্থতার সময়ে সাহায্য করেছেন এই কারণে, বাবা বাড়ি ও অন্যান্য অস্থাবর সম্পত্তি ওই দাদাকে ‘উইল’ করে দিতেই পারেন।
কিন্তু উইল-কর্তার মৃত্যুর পর উইলটি বাইরে প্রকাশ করতেই হবে। অর্থাৎ, ‘প্রোবেট’ নেওয়ার জন্য, সম্পত্তি যেখানে, সেই এলাকার (জুরিসডিকশনের) নির্দিষ্ট আদালতে ‘প্রোবেট’ মামলা দায়ের করতেই হবে। এই সময় আইনত উইলের সম্ভাব্য অন্য উত্তরাধিকারীদের মামলার নোটিস দিতে হয়। ফলে আপনারাও ওই মামলার ‘নোটিস’ পাবেন। যদি আপনি ও বড় দাদা (যিনি ২০০০ থেকেই আলাদা থাকতেন), মনে করেন উইলটি বৈধ নয় বা বৈধ উপায়ে উইলটি হয়নি, তা হলে নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময়ে নিজের ‘আপত্তি’ দাখিল করতে পারেন।
আবার আপনি বলছেন যে, দাদা উইলটি বাইরে আনছেন না। আপনারাও মর্মার্থ সম্পর্কে কিছু জানতে পারছেন না। আপনার যদি মনে হয় উইলটি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে, তা হলে তার সার্টিফায়েড কপি বার করে দেখতে পারেন। না-হলে মেজদা বলুন, বাবা স্থাবর অস্থাবর যা সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন, তার থেকে আপনাদের অংশ বা ভাগ দাবি করতে। প্রয়োজনে ওই দাদাকে নিয়ে আদালতে যান। তা হলে দেখবেন আপনার বাবা কোনও উইল করে থাকলে নিজের ভাগ হারানোর ভয়ে বড়দা দাদা উইলটি বার করেছেন। তবে বাবা উইল করে গেলে কী হবে, দাদাকে কিন্তু উইলের প্রোবেট নেওয়ার জন্য তা প্রকাশ্যে আনতেই হবে। না-হলে সম্পত্তি একা দাদা ভোগ করতে পারবেন না।
• গোল্ড সেভিংস ফান্ডে লগ্নি করতে আগ্রহী। ওই ফান্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন।
বিকাশ রায়, দমদম
আপনি গোল্ড সেভিংস ফান্ডে লগ্নি বলতে ঠিক কী বোঝাতে চাইছেন, তা স্পষ্ট নয়। যাই হোক, সোনা নির্ভর মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি সম্পর্কে একটা দিশা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এখানে আপনি দু’ভাবে লগ্নি করতে পারেন।
১) গোল্ড ইটিএফে লগ্নি করতে পারেন। ইটিএফ মানে হচ্ছে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড। বোঝাই যাচ্ছে এই ইনডেক্স ফান্ডটি (যে ফান্ড নির্দিষ্ট একটি ইনডেক্স বা সূচক বেছে নিয়ে তার আওতায় থাকা বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারে লগ্নি করে) স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত থাকে। সূচক হিসেবে গোল্ড ইটিএফ ফান্ড বেছে নেয় গোল্ড ইনডেক্স-কে। গোল্ড ইনডেক্সের আওতায় সাধারণত সেই সমস্ত সংস্থারই শেয়ার কেনাবেচা চলে, যাদের সোনা নিয়ে কারবার। এই সংস্থাগুলির শেয়ারেই টাকা ঢালে ফান্ডটি। ঠিক যে-গুরুত্ব বা অনুপাতে বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার নিয়ে তৈরি হয় সূচকটি, লগ্নির টাকাও সেই অনুপাতেই খাটায় মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থা। অর্থাৎ সূচকে কোনও সংস্থার শেয়ার যতটা গুরুত্ব পায়, সেই অনুপাতে শেয়ার কেনা হয়। ফলে সূচক বাড়লে আপনার লাভ, পড়লে লগ্নির মূল্যও পড়বে। তবে সূচককে ছাপিয়ে বেশি লাভ করার কৌশল নেওয়া হয় না এতে।
২) লগ্নি করতে পারেন ফান্ড অফ ফান্ডস-এ। এই ফান্ড বিভিন্ন ধরনের গোল্ড ইটিএফে টাকা খাটায়। এটা পরোক্ষ ভাবে গোল্ড ইটিএফে লগ্নি।
সোনা ভিত্তিক মিউচুয়াল ফান্ডে কোনও অবস্থাতেই সরাসরি হাতে সোনা রাখা হয় না। সাধারণ মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করার যে যে শর্ত রয়েছে, সেগুলি এখানেও প্রযোজ্য। এ ক্ষেত্রে ছোট লগ্নি দিয়ে শুরু করতে পারেন।
সাধারণ লগ্নিকারীদের অনেকের পক্ষেই সোনা কিনে রাখা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে তাঁরা সম্পদ তৈরির জন্য সোনা নির্ভর ফান্ডে টাকা লাগাতে পারেন। মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকি এড়ানোর জন্যও এটা ভাল পথ হতে পারে।
বাজারে বিভিন্ন সংস্থার নানা গোল্ড ইটিএফ ও ফান্ড অফ ফান্ডস রয়েছে। ফলে লগ্নিকারীদের সামনে সুযোগ অনেকটাই। তবে যে-ধরনেরই ফান্ড হোক না কেন, অতীতের পারফর্ম্যান্স দেখে মনে করবেন না যে, তা ভবিষ্যতেও একই রকম রিটার্ন দেবে। |
(পরামর্শদাতা: উইশলিস্ট ক্যাপিটাল অ্যাডভাইজর্সের ডিরেক্টর নীলাঞ্জন দে)
(আইনি পরামর্শ জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়) |
|
|
|
|
|