ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল স্কুলের ছাত্রীদের মনে। মেয়েদের মন থেকে সেই কুসংস্কার ঝেড়ে ফেলার লক্ষ্যে মঙ্গলবার ঝালদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে হাজির হন ঝালদার পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার। তাঁর সঙ্গী এক পুরোহিত। দু’জনেই ছাত্রীদের বুঝিয়েছেন ভূত বলে কিছু নেই।
এই অবধি ঠিক ছিল। কিন্তু, ভূতের ভয়ে স্কুলের যে শৌচাগারে যেতে ভয় পাচ্ছে ছাত্রীরা, সেখানে শান্তিজল ছিটিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন প্রদীপবাবু ও তাঁর সঙ্গী। যে ক্লাসের ছাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ভয় পেয়েছে, সেই ক্লাসের বাইরের বারান্দায় পুরোহিত শান্তিজল ছেটানোর পাশাপাশি ধূপধুনোও দিয়েছেন এ দিন। প্রদীপবাবু এই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদকও। বিজ্ঞানমনস্ক লোকজনের বক্তব্য, এ সব করে পরোক্ষে কুসংস্কারকে আরও প্রশ্রয় দেওয়া হল। বরং উচিত ছিল, ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মন থেকে অহেতুক আতঙ্ক তাড়ানোর চেষ্টা করা। |
ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক মধূসূদন মাহাতো বলেন, “ভূত বলে তো কিছু নেই। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের ডাকলে তা ছাত্রীদের কাছে প্রদর্শনী-সহ প্রমাণ করে দেব। ছাত্রীদের এই সম্পর্কিত যাবতীয় কৌতূহলও বিজ্ঞানের যুক্তিতে পরিষ্কার করব।”
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা উমা দত্ত বলেন, “ভয়ে শৌচাগারে যাওয়াই কার্যত বন্ধ করে দিয়েছিল ছাত্রীরা। শিক্ষিকারা বোঝানোর চেষ্টা করলেও ফল হয়নি।” তবে, পুরপ্রধানের নিজের সঙ্গে পুরোহিত নিয়ে যাওয়াটা অবশ্য খুব সমর্থন করতে পারছেন না মধুসূদনবাবু। তাঁর কথায়, “এটাও তো এক ধরনের কুসংস্কারই! আমাদের কাছে এ সবের কোনও বিজ্ঞানভিত্তিক যুক্তি নেই। তবে, এটাও ঠিক বহু মানুষ অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করতে শুভ শক্তির আরাধনা করেন। হয়তো সেই জায়গা থেকেই পুরপ্রধান পুরোহিত নিয়ে গিয়েছিলেন।” পুরপ্রধানের যুক্তি, “ছোট মেয়েরা কোনও কারণ ভয় পেতেই পারে। আমাকে একাধিক অভিভাবক এই আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন। তাই নিজে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছিলাম। আর আমরা তো বাড়িতে পুজো করিই। সেই সূত্রেই পুরোহিতকে বলেছিলাম সঙ্গে যেতে।” |