ঠিক যেন কোনও অ্যাকশন ভরপুর হিন্দি ফিল্ম।
মাঝরাতে দুষ্কৃতীদের ধরতে ধাওয়া করছে পুলিশের গাড়ি। সুনসান সড়কের উপর ছুটে চলেছে দুষ্কৃতী ও পুলিশের গাড়ি। পুলিশের উদ্দেশ্যে চলন্ত গাড়ি থেকে ছুটে চলেছে একের পর এক গুলি। ইট-বৃষ্টিও চলছে সমান তালে। তাতেও পুলিশ না থামায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হতে থাকে দেশি তাজা বোমা। তবে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। শেষপর্যন্ত অবশ্য লেভেল ক্রসিংয়ে আটকে পড়ে দুষ্কৃতীদের মিনি ট্রাকটি। |
ফুরিয়ে আসে দুষ্কৃতীদের কাছে থাকা অস্ত্র-সরঞ্জাম। তখন চলন্ত গাড়ি থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা শুরু করে দুষ্কৃতীরা। পুলিশকর্মীরাও ছাড়বার পাত্র নন। তাড়া করে পাঁচ জন দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলেন তাঁরা। বাকি কয়েকজন পালিয়ে যেতেও সমর্থ হয়। মাঝরাতে গুলি-বোমার শব্দ শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। |
আটক করা দুষ্কৃতীদের সেই মিনি ট্রাক। |
সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে গোপালনগর থানা এলাকার বনগাঁ-চাকদহ সড়কে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুষ্কৃতীদের নাম ইলিয়াস সর্দার, বাপি বিশ্বাস, শেখ মুজিবর রহমান, মুজাম শেখ ও আবদুল আমিন শেখ। এর মধ্যে ধৃত শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মাস সাতেক আগে খুন ও ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। ধৃতেরা এর আগেও গোপালনগর, বনগাঁ ও গাইঘাটায় ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। সড়কের উপর ট্রাকের চালক ও খালাসিদের মারধর করেও তাঁরা ডাকাতি করে। এ দিন রাত পাহারায় থাকা পুলিশের নির্দেশ না মেনে দুষ্কৃতীদের গাড়িটি পালানোর চেষ্টা করলে সন্দেহ হয় পুলিশের। গোপালনগর থানার ওসি দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বনগাঁ থানার ওসি চন্দ্রশেখর দাসকে জানিয়ে গাড়িটির পিছু নেন। শেষপর্যন্ত তিনি দুষ্কৃতীদের গাড়ি ধরে ফেলতে সক্ষম হন। |
দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রশস্ত্র।—নিজস্ব চিত্র। |
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ধৃতদের কাছ থেকে তিনটি গুলি ভর্তি বন্দুক, তরোয়াল, ছুরি, চাকু, রড, তালা ভাঙার যন্ত্র, ৩টি গুলির খোলা এবং তিনটি দেশি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে দুষ্কৃতীদের মিনি ট্রাকটিও।” ঘটনায় পুলিশের সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসও। |
ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক। |