আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে। কাটোয়ার দেওয়ানি আদালতের (প্রথম) বিচারক সন্দীপকুমার কুণ্ডু গত ২১ অগস্ট এই নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি-র কাছে প্রতিলিপি পাঠিয়ে ১৯ নভেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। মঙ্গলবার পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জাকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। কাটোয়ার সরকারি আইনজীবী (এজিপি) সমীর চট্টরাজ বলেন, “পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে কাটোয়া শহরের মাধবীতলায় বসতবাড়ির দখল নিয়ে দেওয়ানি আদালতে মামলা করেন কর্মকার পরিবারের অংশীদারেরা। সে বছরই আদালত বাড়ির দখল নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয় মামলাকারী কমলা কর্মকার ও অন্যদের। বাড়ির দখল নিতে না পেরে কমলাদেবীরা ফের আদালতে হাজির হয়ে ডিক্রি জারির আবেদন জানান। পুলিশের সাহায্যে যাতে ওই বাড়ির আবেদন নিতে পারেন সেই আবেদনও করেন। |
আদালত এক জন এএসআই এবং দু’জন পুরুষ ও দু’জন মহিলা কনস্টেবল নিয়োগ করে বাড়ির দখল নেওয়ার কথা বলে। সে জন্য ২০০৯ সালে দেওয়ানি আদালত ২০০৯ সালের ১২ মে পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে পুলিশের খরচ কত তা জানতে চাওয়া হয়। ২০ মে তৎকালীন পুলিশ সুপার সেই চিঠির উত্তর দেন। ওই চিঠির নির্দেশ মতো গত বছর ১৭ জুলাই পুলিশের খরচ বাবদ ২৮৩৮ টাকা জমা দেন কমলাদেবীরা। বিচারক চিঠি দিয়ে কাটোয়ার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
গত ২৬ জুলাই সন্দীপকুমার কুণ্ডু তাঁর নির্দেশে জানান, বারবার জানানো সত্ত্বেও ৮ এপ্রিল পর্যন্ত কাটোয়ার ওসি গুরুত্ব দেননি। এর পরে আদালত বিষয়টি পুলিশ সুপারের নজরে আনে। বিচারক জানিয়েছেন, পুলিশ সুপার সেই নির্দেশ না মেনে আদালতকে নিজস্ব মতামত জানিয়েছেন। এজিপি সমীরবাবু জানান, পুলিশ সুপার ২০ মে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ওই সংখ্যক পুলিশকর্মী দিয়ে বাড়ি দখল সম্ভব নয়। ন্যূনতম পাঁচ সেক্টর পুলিশ দরকার।
ওই চিঠি দেখার পরে বিচারক গত ২৬ জুলাই নির্দেশ দেন, ২১ অগস্ট পুলিশ সুপারকে সশরীরে হাজির থাকতে হবে। কিন্তু পুলিশ সুপার সে দিন আদালতে হাজির হননি। এজিপি আদালতকে জানান, জেলায় পুরভোটের মনোনয়ন চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সুপার ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি। সে দিন বিচারক তাঁর নির্দেশে পুলিশ সুপারের ‘সৌজন্যবোধ’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এর পরে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন। |