হুগলির রবীন্দ্রনগরের কুখ্যাত সমাজবিরোধী তোতন বিশ্বাসকে দুর্গাপুর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সমেত গ্রেফতার করল পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে হুগলি জেলা পুলিশ দুর্গাপুরের কাঁকসা থানার গোপালপুরে হানা দিয়ে তাঁকে ধরে। তদন্তকারীদের দাবি, সেখানে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া থাকছিল ওই দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। রবীন্দ্রনগর এলাকায় ক্রমেই ত্রাস হয়ে উঠেছিল তোতন। হুগলির বিভিন্ন থানায় তাঁর নামে খুন, তোলাবাজি-সহ নানা দুষ্কৃতীমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে। হুগলির গণ্ডী ছাড়িয়ে দুই ২৪ পরগনা, নদীয়াতেও সে নানা দুষ্কর্ম করেছে বলে পুলিশের দাবি। ওই সব জেলাতেও পুলিশের খাতায় তার নাম রয়েছে। কয়েক মাস আগে রবীন্দ্রনগরে দিনের বেলায় ভরা বাজারে দু’দল দুষ্কৃতীর মধ্যে কার্যত খণ্ডযুদ্ধ বাধে। বোমা-গুলি চলে। এক রং মিস্ত্রী গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন। ওই ঘটনাতেও নাম জড়ায় তোতনের। পুলিশ অবশ্য তার টিঁকি ছুঁতে পারছিল না। জেলা সদর চুঁচুড়ায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম বাড়তে থাকায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল। কিছু দিন আগে তোতন এবং তার দাদা তারক বিশ্বাসকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার সাঁটা হয় জেলা পুলিশের তরফে। কেউ তাদের খোঁজ দিতে পারলে ইনাম দেওয়া হবে বলে পোস্টারে জানানো হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তোতনকে ধরতে পারায় ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল পুলিশের। তারক অবশ্য আগেই ধরা পড়েছে।
|
গলসি ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল জনার্দন চট্টোপাধ্যায়কে। নতুন দায়িত্ব পেলেন দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সহ-সম্পাদক পরেশ পাল। তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, দলের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতেই এই সিদ্ধান্ত। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটের বেশ আগে থেকেই জনার্দনবাবুর কাজকর্ম নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন দলের উঁচুতলার নেতারা। কিন্তু ভোটের আগে কিছু করার ঝুঁকি না নিয়ে ভোট মিটতেই এই সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। দলেরই একাংশের খবর, স্থানীয় বালি মাফিয়াদের সঙ্গে জনার্দনবাবুর ওঠাবসা এলাকার লোকজনের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলেছিল। তাছাড়া দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি যে ভাবে দুই দশকের পঞ্চায়েত সদস্য এবং শেষ তিন বছরের বুদবুদ পঞ্চায়েত প্রধান কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রার্থীপদ বাতিল করে দিয়েছিলেন তাতেও ক্ষুণ্ণ হন দলীয় নেতৃত্বের একাংশ। দলীয় রাজনীতিতে কাশীনাথবাবু বরাবরই জনার্দনবাবুর বিরোধী গোষ্ঠী পরেশ পালের অনুগামী হিসাবে পরিচিত। পরেশবাবু বলেন, “জেলা কমিটির চূড়ান্ত করা তালিকায় বেশ কিছু রদবদল করে দিয়েছিলেন তৎকালীন ব্লক সভাপতি। সেজন্যই কাশীনাথবাবুর মতো কেউ কেউ নির্দল হিসাবে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছিলেন।” সেই পরেশবাবুকেই দল এবার ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছে। স্বভাবতই খুশি কাশীনাথবাবু বলেন, “দলের ভাবমূর্তি এবার ফিরে আসবে।” পরেশবাবু বলেন, “দল দায়িত্ব দিয়েছে। আমি তা পালন করব।” তবে ফোন বন্ধ থাকায় জনার্দনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। |