|
|
|
|
ছ’মাসের মেয়েকে ডুবিয়ে খুন, ধৃত বাবা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মালদহ |
কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে গোলমাল শুরু হয়েছিল। শেষে ছয় মাসে কন্যাসন্তানকে জলে ডুবিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। রবিবার রাত ১২টা নাগাদ রতুয়ার রাজাপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটির নাম জেলেখা খাতুন। স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে মেয়েকে খুন করার অভিযোগে পুলিশ মনিরুল হককে গ্রেফতার করেছে। মালদহের পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “কন্যা সন্তানের জন্মের পর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে মনিরুল হকের গোলমাল শুরু বয়। নিজের শিশু কন্যাকে জলে ডুবিয়ে খুন করে মনিরুল পালিয়ে গিয়েছিল। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় বছর আগে রতুয়ার কাঁসাদারা গ্রামের দিনমজুর মনিরুল হকের সঙ্গে রাজাপুর গ্রামের মিনার বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পরেই মিনা বিবি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। স্ত্রী কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার পর দিনই স্ত্রীকে মেয়ে-সহ বাপের বাড়ি পাঠিয়ে মনিরুল ত্রিপুরা আগরতলায় মজুরির কাজে চলে যান। তার পর থেকে তিনি আর স্ত্রী, মেয়ের খোঁজ নিতেন না। তিন দিন আগে মনিরুল বাড়িতে ফেরেন। রবিবার তিনি শ্বশুরবাড়ি যান। সেখানে ফের মেয়েকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর গোলমাল, কথা কাটাকাটি শুরু হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, রাতে চুপিসারে শিশু কন্যাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বার হন মনিরুল। শ্বশুরবাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে স্যালো পাম্পের গর্তে কন্যাকে জলে ডুবিয়ে খুন করে পালিয়ে যান।
সোমবার সকালে জমিতে জল দিতে এসে কয়েকজন গ্রামবাসী ওই গর্তে মৃত শিশুটিকে ভেসে থাকতে দেখেন। এলাকায় হইচই শুরু করেন। গ্রামবাসীরা গিয়ে শিশুটিকে শনাক্ত করেন। মিনা বিবিও সেখানে গিয়ে মেয়েকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েনয়। মিনাদেবী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, স্বামীই মেয়েকে খুন করেছে। মেয়ের জন্মের পর থেকেই আমাদের দুই জনকে ও দেখতে পারত না। বাপের বাড়িতে রেখে চলে যায়। কোনও খোঁজখবর নিতে না। রবিবার এসে জানায়, ও মেয়েকে বিয়ে দিতে পারবে না। কোনও টাকাপয়সা নেই। মেয়েকে রেখে লাভ নেই। প্রতিবাদ করায় মারধর করে। তবে সেই সময় আর কিছু করতে পারেনি। মিনাদেবী বলেন, “রাতে মেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। কখন পাশ থেকে স্বামী মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে বুঝতে পারিনি। আগে টের পেলে ওকে রাতে বাড়িতেই থাকতে দিতাম না। ওর ফাঁসি চাই।” এ দিন সকালে প্রায় পাঁচ ঘন্টা তল্লাশি চালিয়ে রতুয়া থানার পুলিশ গাজল থেকে মনিরুল হককে গ্রেফতার করেছে। রতুয়া থানার ওসি বিজয় সিংহ রায় জানান, ধৃতের চোখেমুখে আফসোসের লেশ নেই। শুধু বলেছেন, সংসার করতে ওর ভাল লাগছিল না। এ বার স্ত্রী ও মেয়ের থেকে ‘ছুটকারা’ পেয়েছে। |
|
|
|
|
|