টানা ১৫ দিন ধরে চা বাগানের শ্রমিক আবাসনে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা টানা ৭ ঘণ্টা ভারত-ভুটান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল। সোমবার সকাল ৬টা থেকে থেকে বানারহাটের নিউ ডুয়ার্স চা বাগানের শ্রমিকরা লাগোয়া রাস্তা অবরোধ শুরু করে। অবরোধের জেরে ভুটানের সামচি শহরের সঙ্গে ডুয়ার্সের যোগাযোগ বন্ধ থাকে। রাস্তার দু’পাশে অসংখ্য গাড়ি আটকে থাকায়, দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।
শ্রমিকদের অভিযোগ, ১২ অগস্ট থেকে বাগানের শ্রমিক লাইনে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বানারহাটে পর্ষদের দফতরে অভিযোগ জানানোর পর কর্মীরা বাগানে এসে ট্রান্সফরমার বিকল হয়েছে জানিয়ে ফিরে যান। এর পরে একাধিক বার আবেদন-নিবেদন করেও পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি বলে অভিযোগ। বিদ্যুৎ পরিষেবা না থাকায় বাগানের শ্রমিক লাইনের ৪৫০ জন বাসিন্দাকে গরমে দুর্ভোগে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। কয়েকজন বাসিন্দা গরমে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন বলে দাবি। বিপাকে পড়েন শ্রমিক লাইনের শ’খানেক পড়ুয়াও। বাগানের পুরো শ্রমিক লাইন অন্ধকারে ডুবে থাকায় হাতির আতঙ্কে সন্ধের পরে বাসিন্দারা প্রয়োজন থাকলেও বাড়ি থেকে বের হওয়ার সাহস পান না বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। যদিও বিদ্যুৎ পর্ষদের জলপাইগুড়ির জেলা বাস্তুকার নন্দনন্দন বিশ্বাস বলেন, “সোমবারের মধ্যেই বিকল ট্রান্সফরমার বদলে দেওয়া হবে। পরিষেবাও স্বাভাবিক হবে। তবে ওই বাগানে শ্রমিক আবাসগুলির বাসিন্দারা ঠিকঠাক বকেয়া বিল পরিশোধ করেন না। ১ লক্ষ টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে।”
ভারত-ভুটান সড়ক অবরোধ। সোমবার এই অবরোধে ভুটানের সামচির সঙ্গে
ডুয়ার্সের
যোগাযোগ থমকে থাকায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। রাজকুমার মোদক।
এ দিন বিক্ষোভকারীদের তরফে বাগানের শ্রমিক দিলীপ দর্জি বলেন, “কিছু বাসিন্দার বকেয়া বিল না পেয়ে কেন সকলকে এ ভাবে কষ্ট দেওয়া হল তা বুঝতে পারছি না। আমরা যারা নিয়মিত বিল পরিশোধ করি তাদের এ ভাবে বঞ্চিত করার কোনও মানে হয় না। যাঁরা বিল মেটায়নি তাদের বিরুদ্ধে পর্ষদ আইনি পদক্ষেপ করতে পারে।”
এ দিন সকাল থেকেই কাজে না গিয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করার দাবিতে অবরোধ শুরু করেন বাগানের শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। অবরোধ শুরুর পরে পুলিশ গিয়ে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলেও ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা অবরোধ চালিয়ে যান। পরে, পুলিশের পক্ষ থেকে ব্লক প্রশাসন এবং পর্ষদ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। এই দিনই পর্ষদ কর্তৃপক্ষ নতুন ট্রান্সফরমার বসাতে রাজি হলে, দুপুর ১টা নাগাদ অবরোধ তুলে নেন চা শ্রমিকরা। জলপাইগুড়ির ডিএসপি দমন কর্মকার বলেন, “বিদ্যুৎ পর্ষদের সিদ্ধান্তের বিষয়টি শ্রমিকদের জানানোর পরে তাঁরা অবরোধ তুলে নিয়েছেন। দুপুরের পরে এই পথে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।”
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website
may be copied or reproduced without permission.